X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকসু ভোটকেন্দ্র: হলে না বাইরে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২১ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৪আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:০৩

ডাকসু ভবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন এবং নির্বাচনের আচরণবিধির বিষয়ে পরিবেশ পরিষদের আলোচনা সভায় প্রগতিশীল ছাত্রজোট এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে স্থাপনের ব্যাপারে মত দিয়েছে। তবে ছাত্রলীগসহ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাতটি সংগঠন ভোটকেন্দ্র হলের ভেতরে রাখার বিষয়ে মত দেয়।
সোমবার (২১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটি যে সুপারিশে করেছে তাতে বলা হয়েছে, যারা শুধু অনার্স এবং মাস্টার্সে পড়ছেন এবং নিয়মিত ছাত্র তারাই ডাকসুর সদস্য এবং প্রার্থী হতে পারবেন।
ডাকসু নির্বাচনি আচরণবিধির বিষয়ে ছাত্রদল এবং বাম সংগঠনগুলো যে প্রস্তাব রেখেছে তা হলো, নির্বাচনি পোস্টারের সংখ্যা সীমিত করতে হবে। একমাত্র গোপন কক্ষ ছাড়া বাকি সব জায়গা সিসি ক্যামরার আওতায় আনতে হবে। প্রতিটি হলে প্যানেল পরিষদের পরিচিতি সভা করতে হবে। মোটরসাইকেল শোডাউন দেওয়া যাবে না।
সভা শেষে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ ছাড়া অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন বাইরের কোনও একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর এখন ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। সব সংগঠনের সহাবস্থান বা সমরাজনীতি চর্চার পরিবেশ তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে একটা ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে, একটা আশঙ্কাহীন নির্বাচন আয়োজন করতে, প্রথমবারের মতো হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছি। ১৯৯৪ সালে পরিবেশ পরিষদের সভায় ছাত্রলীগই হলের বাইরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি করেছিল।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্কসবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ যদি না থাকে, তাহলে ভালো একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়টি সভায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। সে কারণে আমরা অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনই প্রশাসনকে জোর দিয়ে বলেছি, ভোটকেন্দ্র হলগুলোতে না করে একাডেমিক ভবনে করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘ড. মিজানুর রহমান খান (গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক) দাবি করছেন তারা গঠনতন্ত্রে কোনও মৌলিক পরিবর্তন আনেননি। কিন্তু আমরা দেখছি মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনটি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এগুলো হলো, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এ ধরনের পদগুলো সংযুক্ত হতে পারে বা বাদ যেতে পারে। কিন্তু আমাদের প্রধান দাবি ছিল, কারা সদস্য হতে পারবে তা আলোচনায় নিয়ে আসা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে সভাপতির ক্ষমতার ভারসাম্য করা। কিন্তু এসব বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বজনগ্রাহ্য কাউকে কমিটিতে রাখা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, যে পাঁচজনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে তারা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা মনে করি, তারা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনকে সহযোগিতা করার জন্য কাজ করছে। এটা আমরা মানতে পারি না। বৈঠকে ছাত্রলীগের সঙ্গে অন্য সংগঠনগুলোর বিরোধ ছিল এ বিষয়ে যে, তারা (ছাত্রলীগ) মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং হলগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে। কিন্তু সবাই জানে, ছাত্ররা হলগুলোতে কি দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথমত প্রস্তাবটা অবান্তর, হাস্যকর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে অপমান করা। যে ধরনের ছাত্র সংগঠন এ ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে তাদের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, আছে লড়াকু আন্দোলনের ইতিহাসও। আমরা মনে করি, ডাকসু নির্বাচনের মূল আয়োজনকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। আজকের মিটিংয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্তর্ভুক্ত অন্তত সাতটি সংগঠন পোলিং বুথগুলো হলের মধ্যে রাখার ব্যাপারে মত দিয়েছে। প্রগতিশীল ছাত্র জোটের অন্তর্ভুক্ত তিনটি ছাত্র সংগঠন এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দাবিটি করেছিল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী সভা সঞ্চালনা করেন।

/ওআর/
সম্পর্কিত
প্রতি শ্রেণিতে ৫৫ শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশ প্রতিমন্ত্রীর
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বেড়েছে
সর্বশেষ খবর
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও ৩ নেতাকে বহিষ্কার বিএনপির
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও ৩ নেতাকে বহিষ্কার বিএনপির
দায়িত্ব পালনকালে কতটা সুরক্ষা পাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা
পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস আজদায়িত্ব পালনকালে কতটা সুরক্ষা পাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা
শাহীনের বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে পাকিস্তানের সিরিজ ভাগাভাগি
শাহীনের বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে পাকিস্তানের সিরিজ ভাগাভাগি
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু