কওমি মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না কেনও প্রশ্নের জবাবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নিয়ন্ত্রক সর্বোচ্চ বোর্ডের সদস্য মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেছেন, ‘জাতীয় সংগীতের বিষয়ে আমাদের অবশ্যই বক্তব্য আছে। এটা আমরা গাইবো কী, গাইবো না এটা নিয়ে আমাদের নিজস্ব বক্তব্য আছে।’
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘৭১ টিভি’র একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। নূর সাফা জুলহাজ এর উপস্থাপনায় ওই অনুষ্ঠানে অনলাইনে মুফতি ফয়জুল্লাহ যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
কওমি মাদ্রসায় জাতীয় সংগীত না গাওয়া প্রসঙ্গে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসায় মূলত কোরআন-হাদিসের শিক্ষা প্রদান করে থাকে। কোরআন-হাদিস আপনি একটি সংগীত দ্বারা শুরু করতে পারেন না। আমরা সূরা ফাতেহা, বিসমিল্লাহ এর মাধ্যমে যেকোনও কাজ শুরু করি। সেখানে যদি জাতীয় সংগীত বা সংগীত দিয়ে যদি শুরু করতে হয়, সেটা আমাদের দ্বারা কখনই সম্ভব না। কোরআন সংগীত দিয়ে শুরু হতে পারে না, হাদিস সংগীত দিয়ে শুরু করতে পারি না।’
কওমি মাদ্রসায় জাতীয় সংগীত না গাওয়ার পেছনে দুইটি যুক্তি তুলে ধরে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘প্রথমত, কোরআন-হাদিস কখনও সংগীত দিয়ে শুরু হতে পারে না। দ্বিতীয়ত সবগুলি কওমি মাদ্রাসা মসজিদ কেন্দ্রীক, মসজিদের মধ্যে বাদ্যযন্ত্রসহ সংগীত পরিবেশিত হতে পারে না।’
এই সময় বহুজাতিক রাষ্ট্র ভারতের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেখানে (ভারতে) জাতীয় সংগীত নিয়ে মতপার্থক্য আছে। সব প্রদেশ এটি মানে না। পুরো দেশ একসঙ্গে এক জাতীয় সংগীত মানা হয় না।’
মুফতি ফয়জুল্লাহ জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘বাংলাদেশের যে জাতীয় সংগীতটি লেখা হয়েছে এটি কী আমাদের স্বাধীনতাকে লক্ষ্য করে লেখা হয়েছে? নাকি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পূর্বেই লেখা হয়েছে?’
নতুন করে জাতীয় সংগীত রচনার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনেকরি বাংলাদেশে জাতীয় সংগীতটি বাংলাদেশের স্বকৃয়তা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সবকিছুকে সামনে রেখে, পুরোপুরি জাতীয়ভাবে, যেভাবে হওয়া উচিত তেমন আমাদের অনেক লেখক আছে, আপনারাও আছেন, সেভাবে আমরা লিখতে পারি।’
এই সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক শিক্ষা উপদেষ্ঠা রাশেদা কে চৌধুরী এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।