X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন

ঢাবি প্রতিনিধি
০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫৭আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫৭

পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ১৭টি পরিবেশবাদী সংগঠন। শনিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) উদ্যোগে সমাবেশে অংশ নেন এসব সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ‘পলিথিন-প্লাস্টিকের ছড়াছড়িতে হুমকির মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য: পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাবহার বন্ধে চাই কার্যকর উদ্যোগ'- ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশের উদ্যোক্তারা বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত দুই দশকে শুধু রাজধানীতেই প্লাস্টিক বর্জ্য বেড়েছে তিনগুণের বেশি। অথচ প্লাস্টিক পলিথিনের বিকল্প তৈরিতে নেই কোনও উদ্যোগ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গলদ ও নগরবাসীর অসচেতনতায় ভয়ংকর পরিণতি পথে এগোচ্ছে প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ।

সমাবেশ শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যানের উদাহারণ টেনে বলা হয়, রাজধানী ঢাকায় ২০০৫ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৭৮ টন প্লাস্টিক বা উৎপাদিন হতো, সেখানে ২০২০ সালের হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৪৬ টনে। রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় ১ হাজার ২০০ কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি হচ্ছে। এগুলোর বেশিরভাগই পুরান ঢাকা কেন্দ্রিক। শুধুমাত্র ঢাকা শহরে প্রতিদিন ২ কোটির বেশি পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়। এগুলো ড্রেন নালা-নর্দমা, ডোবা ইত্যাদি ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার প্রকোপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন ৩৫ লাখের বেশি টিস্যু ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত হচ্ছে। এসব পলিথিনের ব্যাগ হলেও কাপড়ের ব্যাগ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধকারী প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্ববাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিধান করা হলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এমন অবস্থায় ওই আইন কার্যকরে এ বছরের জানুয়ারিতে ফের সেই আইনি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে এক বছরের সময় বেঁধে দিয়েছে উচ্চ আদালত। পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮৯৭টি অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে ৫হাজার ৯৫৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ কোটি ৮১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। পলিথিন ব্যবহারের কারণে ৯১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

সমাবেশে আয়োজকদের পক্ষ থেকে পলিথিন ও প্লাস্টিকের জন্য ৯টি সুপারিশ করা হয়। তাদের সুপারিশগুলো হলো-

১. পলিথিন নিষিদ্ধের আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদফতরের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
২. পলিথিন শপিং ব্যাগ ও টিস্যু ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা।
৪. পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙ্গা ইত্যাদি সহজলভ্য করা এবং এগুলো ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।
৫. বন্ড লাইসেন্সের মাধ্যমে আমদানিকৃত পলি প্রোপাইলিন পলিথিন শপিং ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। টিস্যু ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৬. পরিবেশ অধিদফতর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
৭. প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনর্ব্যবহারের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
৮. প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালনে নাগরিকদের সচেষ্ট হওয়া।
৯. প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সরকার বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাসফের সহ-সম্পাদক হাসিনা আরিফ, আমিনুল ইসলাম টুকু, সুবন্ধন সামাজিক কল্যাণের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, গ্রিন ফোর্সের প্রতিনিধি আহসাব হাবিব, মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মাহাবুল হক, নাসফের সহ-সভাপতি কে এস সিদ্দিক আলী, সাধারণ সম্পাদক তৈয়ব আলীসহ আরও অনেকে।

/ইউএস/
সম্পর্কিত
পলিথিন নয় মানুষের হাতে থাকবে সোনালী ব্যাগ: পাটমন্ত্রী
সুস্থভাবে বাঁচতে প্লাস্টিক পণ্য বর্জন করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
প্লাস্টিক দূষণ রোধে সিগারেটের ফিল্টার ও ভেপোরাইজার নিষিদ্ধের দাবি
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা