X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুর থেকে জিহাদি বই আসতো বাংলাদেশে

আমানুর রহমান রনি
২৬ জানুয়ারি ২০১৬, ১৪:০৩আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০১৬, ১৭:১৫

জঙ্গি সন্দেহে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা

সিঙ্গাপুর থেকে জঙ্গি সন্দেহে ফেরত পাঠানো ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জনের এ কাজে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তারা জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে, তারা পরিচিতদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে বিভিন্ন ধরনের জিহাদি বই কিনে তা বাংলাদেশে পাঠাতো। এরা মূলত সিঙ্গাপুরের একটি মসজিদে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দীন রাহমানি, জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী এবং ইসলামিক গবেষক জাকির নায়েকের ওয়াজের সিডি শুনত। তাদের লেকচার নিয়ে আলোচনা করত।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এমন তথ্য পেয়েছে। মঙ্গলবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্দেহভাজনরা ২ থেকে ৮ বছর মেয়াদে সিঙ্গাপুরে শ্রমিকের কাজ করত। তারা জসীমউদ্দীন রাহমানিয়া, আবুল কালাম এবং ড. জাকির নায়েকের ওয়াজ শুনে আহলে হাদিসের অনুসারী হন। মসজিদ-মাদ্রাসা, এতিমখানা ইত্যাদির কথা বলে তারা প্রত্যেকের কাছে ১০ থেকে ২০ ডলার করে সিঙ্গাপুরি ডলার চাঁদা আদায় করতো। এই টাকা দিয়ে তারা জিহাদি বই কিনে বাংলাদেশে পাঠাতো।’

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো ‘জঙ্গিরা’ সিঙ্গাপুরের মোস্তফা মার্কেটের পাশে অ্যাঙ্গুলিয়া নামের একটি মসজিদে প্রতি রবিবার মাগরিবে নামাজের পর সমবেত হয়ে ওয়াজ শুনতো। মসজিদে বসেই তারা সদস্য ও অর্থ সংগ্রহসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে জিহাদি ভিডিও দেখত। স্থানীয় আমিনুর, নুরুল হক এবং আশরাফ প্রায়ই সেই মসজিদে বয়ান করত।

এর আগে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ২৬ জনকে ফেরত পাঠায় সিঙ্গাপুর। এদের মধ্যে ১৪ জন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ‘জঙ্গিরা’ একে অন্যের সঙ্গে মোবাইলে ইসলামী গবেষক মুফতি আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, শায়েখ মতিউর রহমান মাদানী, আমানুল্লাহ বিন ইসমাইলের ওয়াজের অডিও ফাইল শেয়ার করে শুনতো।

সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে জানায়, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) কিংবা আল-কায়েদার সঙ্গে এরা জড়িত রয়েছেন। তবে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ১৪ জন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দিন রাহমানিয়ার অনুসারী। তদন্তে আইএস কিংবা আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ওই ১৪ জন হচ্ছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. জাফর ইকবাল, কুমিল্লার গোলাম জিলানী, মো. নুরুল আমিন, মাহমুদুল হাসান, টাঙ্গাইলের মো. আমিনুর, আব্দুল আলীম, মো. শাহ্‌ আলম, ঝিনাইদহের আকরাম হোসেন, কুড়িগ্রামের আলম মাহাবুব, চুয়াডাঙ্গার আবদুল আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পারভেজ ডলার, মুন্সিগঞ্জের মো. জসিম, পাবনার মো. আশরাফুল ও ঢাকার মো. সাইফুল ইসলাম। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের যাচাই বাছাই চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।’

বাকি ১২ জনকে অভিভাবকদের জিম্মায় দিয়েছে ডিবি। তবে তাদেরকেও গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম। বাংলাদেশে তাদের সঙ্গে কারও যোগাযোগ ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

/এআরআর/এসটি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পাচ্ছে ২৯ প্রতিষ্ঠান
‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পাচ্ছে ২৯ প্রতিষ্ঠান
মানবিক সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে: স্পিকার
মানবিক সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে: স্পিকার
দিল্লির রেকর্ড রানের জবাবে লড়াই করে হারলো মুম্বাই
দিল্লির রেকর্ড রানের জবাবে লড়াই করে হারলো মুম্বাই
মোরসালিনের ফেরার ম্যাচে ব্রাজিলিয়ানের জোড়ায় জিতলো কিংস
মোরসালিনের ফেরার ম্যাচে ব্রাজিলিয়ানের জোড়ায় জিতলো কিংস
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন: এখনও অপেক্ষায় স্বজনরা
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন: এখনও অপেক্ষায় স্বজনরা