একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেলে আরেকটি মামলা। এভাবেই একের পর এক ধর্ষণ, যৌতুক ও নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে সাবেক স্ত্রী আখি আক্তারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন হাসানুজ্জামান নামের এক ভুক্তভোগী। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি-বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর প্রজেক্টে উপ-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে চাকরি করেন তিনি। তবে বিআরটিসিতে পে-রোলে সহকারী হিসাব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আখি আক্তার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, একজন নারী হিসেবে অধিকার আদায়ে তিনি শুধুমাত্র আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর (২০২২) রাজধানীর আদাবর থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর প্রজেক্টের কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান উল্লেখ করেন, চাকরিতে থাকা অবস্থায় পরিচয় ও বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে আখি আক্তার গত ৬ মার্চ (২০২২)তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণের মামলা করেন। এরপর মামলার শুনানির দিন আদালত তাকে জামিন না-মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। জেলে থাকা অবস্থায় আখি জেল হাজতে দেখা করে বিয়ের শর্ত দেন— যার বিনিময়ে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে জামিনে মুক্ত করবেন। পরে স্বজনদের মাধ্যমে তার সঙ্গে আপস করেন হাসানুজ্জামান। সামাজিক অবস্থা, মানসম্মান, চাকরি, মানসিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ১৯ এপ্রিল (২০২২) আদালতে হাজিরাকালীন কাবিন ও আপসনামায় সই করে জামিনে মুক্ত হই বলে ডিজিতে উল্লেখ করেন তিনি।
হাসানুজ্জামান আরও অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই প্রতিনিয়ত অসংলগ্ন এবং অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন আখি আক্তার। কাবিনের টাকা চাওয়া, নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দেওয়া ও দেয়ালে মাথা ঠোকানো এবং বাইরের মানুষ দিয়ে মারধরের হুমকি দিতে থাকেন। এছাড়া কাপড়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যারও হুমকি দেন স্ত্রী। তার এই সাধারণ ডায়েরির পর আদাবর থানার এসআই সাহেরা খাতুন ৩০ অক্টোবর আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে হাসানুজ্জামানের অভিযোগের সত্যতা উল্লেখ করে উভয়কে আদালতের শরণাপন্ন হতেও অনুরোধ করা হয়।
এরমধ্যে গত ২৬ অক্টোবর হাসানুজ্জামান আখি আক্তারকে তালাকের নোটিশ পাঠান। এ খবর পেয়ে গত ৩ নভেম্বর আখি আক্তার হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে আখি আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, যৌতুক দাবি ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে না। নারী হিসেবে নিজের অধিকার আদায় ও নির্যাতনের ন্যায়বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হাসানুজ্জামানের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন আখি আক্তার।