বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসের (পিএমআই) অর্থপুষ্ট ফাউন্ডেশন ফর আ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ডের (এফএসএফডব্লিউ) সহায়তায় ধূমপানের ক্ষতি নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণার কাজ করবে যুক্তরাজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিশুর, এনাম মেডিক্যাল কলেজ এবং অ্যাসোশিয়েশন ফর কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট (এসিই)। এতে বিস্ময় প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন গণমাধমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিস্ময় প্রকাশ করে প্রজ্ঞা বলেছে, এফএসএফডব্লিউর গ্র্যান্ট তালিকায় যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠানটির নাম রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি মূলত বিভিন্ন তামাক কোম্পানির পক্ষে তথাকথিত গবেষণা পরিচালনা করে থাকে।
তবে এনাম মেডিক্যাল কলেজের মতো স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যবিরোধী হিসেবে বিতর্কিত এই ফাউন্ডেশনের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে প্রজ্ঞা বলেছে, পিএমআইয়ের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ‘ফাউন্ডেশন ফর আ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড’-এর নানা তৎপরতা জনস্বাস্থ্য এবং তামাকবিরোধী কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এফএসএফডব্লিউ মূলত ই-সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের ভ্যাপিং পণ্যের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণকে উৎসাহিত করে থাকে। এ কারণেই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পরপই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, তামাক কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের সুস্পষ্ট স্বার্থ-সংঘাত রয়েছে।
প্রজ্ঞা মনে করে, এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ফাউন্ডেশনের সব ধরনের সহযোগিতা কিংবা যৌথ উদ্যোগ প্রত্যাহার করবে। সরকার ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই নীতি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়।
এ ছাড়া ডব্লিউএইচও পৃথক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তামাক কোম্পানির অর্থায়ন প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যেকোনও সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড হবে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
উদ্বেগের বিষয় হলো, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশেও সংগঠনটির তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতসহ বেশ কিছু দেশ ‘ফাউন্ডেশন ফর আ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড’-এর বিতর্কিত কার্যক্রম প্রতিহত করতে সরকারিভাবে সংগঠনটির সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। এফসিটিসির স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও উচিত হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী বিতর্কিত এই সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়া এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা।
একই সঙ্গে এসিই, এনাম মেডিক্যাল কলেজসহ সব বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের উচিত হবে জনস্বাস্থ্যবিরোধী এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত না করা।