কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার ও ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন পোশাককর্মীরা। সোমবার (১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস)-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব দাবি জানানো হয়।
‘ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার’ ও ‘গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন’ নামে দুটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম।
সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা বেগম বলেন, ‘মুনাফালোভী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অমানবিক নিপীড়নের শিকার শ্রমজীবী মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে এই মে দিবস; যা যুগের পর যুগ সারা বিশ্বের শ্রমজীবী জনগণকে আন্দোলন সংগ্রামের প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে।’
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৪৯ ধারা অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি হার সুপারিশের বিধান এবং ১৪০ (ক) ধারায় বিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নতুনভাবে মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই শ্রমিক নেতা বলেন, আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মজুরি কাঠামো গঠনের কোনও দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। বিশ্ববাজারের দোহাই এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে ক্রমাগত পণ্যমূল্য বাড়ছে এবং বাড়ি ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এর ফলে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’
এ অবস্থায় গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকাসহ মজুরি কাঠামো ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
এসময় সমাবেশে থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে— ৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরিসহ ২২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা; শ্রম আইনের সংশোধন করে শ্রমিক সংগঠনের প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিকবান্ধব শ্রম আইন প্রণয়ন করা; আইএলও কনভেনশন-১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অবিলম্বে অনুসমর্থন করা; শ্রমজীবী মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে রেশনে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বান্ধ্যকালীন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা।
এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল সেক্টরে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের আইন করা; আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ দেওয়া এবং বিধিমালায় সন্নিবেশিত শ্রমিক স্বার্থ-বিরোধী বিধি বাতিল করে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করারও দাবি জানানো হয়।
এসময় সমাবেশে বক্তব্য দেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাদিজা রহমান, সহ- সভাপতি মিসেস সুইটি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, দপ্তর সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম, মিরপুর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. তাহেরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন, সংগঠক জোসনা বেগম, সালমা বেগম, রোকসানা, আমেনা এবং সোনিয়া প্রমুখ।