এমটিএফআই অনলাইন প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ছাড়া অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের তথ্য দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি মাধ্যম চালু করেছে সিআইডি।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম এ ব্যাপারে নজরদারি করছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা প্রতারক চক্রের তথ্য দিয়ে অভিযোগ জানাতে সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হলো।
যোগাযোগের ঠিকানা হলো: ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/
ইমেইল: [email protected] এবং ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ নম্বর: ০১৩২০০১০১৪৮ অথবা ৯৯৯
সিআইডি বলছে, মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ ইনকরপোরেটেড বা এমটিএফই অনলাইন বা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডলার, শেয়ার বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচার কানাডা ও দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। এমটিএফই অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হয় এবং লেনদেন পরিচালনা করা হয়। নিজেদের ছায়া প্ল্যাটফর্মে ট্রেড করার সুযোগ দিয়ে এই অ্যাপ সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে এর কোনও অফিস না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক-ইউটিউবে ব্যাপক প্রচারণা চালায় তারা। বিভিন্ন ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হয়। সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয় একজন আরেকজনকে দেখে। এ ক্ষেত্রে রেফারেল বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কাজ করে। এমটিএফইও এমএলএম পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ অ্যাপসটিতে বিনিয়োগ করেছে। কিছু মানুষ অবশ্য লাভের অংশ পেয়েছে। তবে চূড়ান্ত বিচারে বিনিয়োগের সব অর্থই খোয়াতে হয় গ্রাহকদের।
ঢাকাসহ বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা ও সাতক্ষীরায় প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সারা দেশে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহক এমটিএফইর মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা খুইয়েছেন।
তারা আরও জানায়, গুগল প্লে স্টোর থেকে যে কেউ এমটিএফই অ্যাপসটি ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারতেন। রেজিস্ট্রেশনের পর তাদের নিজস্ব ওয়ালেটে ট্রেড করার জন্য ডলার রাখতে হতো। ডলারের পরিমাণ অনুযায়ী তাদের প্রতিনিয়ত প্রলোভন দিয়ে লাভের কথা বলা হতো। ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে, এমন কল্পিত মুনাফার কথাও বলা হতো।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হয়েছে গ্রাহকদের। ভার্চুয়ালি ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডলার কেনাবেচা করা হলেও লভ্যাংশ দেওয়া হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, শুধু এমটিএফই নয়, দেশে এখনও সক্রিয় আছে অনিবন্ধনকৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক এ ধরনের প্রতারক চক্র, যেখানে বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। অ্যাপস ও অনলাইন ভিত্তিক যেকোনো ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার দরকার।