X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে মেহেরপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র

শফিকুল ইসলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:২৭আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:২৭

খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা রাখতে মেহেরপুরে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন ও দেশের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ৬টি জেলার ২৮টি উপজেলার মানুষ উপকৃত হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানিয়েছে, দেশের মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশের সহনশীল উপযোগী বিএআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বিভিন্ন ফসলের জাত ও প্রযুক্তি বিস্তার এবং প্রয়োজনীয় গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। ২০৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে আধুনিক কৃষি গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জাত, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার করা সম্ভব হবে। এর ফলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়বে, যা খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের পশ্চিমাংশের সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুর। এ জেলার উত্তরে কুষ্টিয়া জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। মেহেরপুর জেলায় মোট জমির পরিমাণ  ৬০ দশমিক ১৮৩ হেক্টর। এর মধ্যে নিট ফসলি জমির পরিমাণ ৬০ দশমিক ০২৪ হেক্টর। এখানে এক ফসলি জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ১৫৩ হেক্টর।  দুই ফসলি জমির পরিমাণ ৩০ দশমিক ৯১৩ হেক্টর, তিন ফসলি জমির পরিমাণ ২৫ দশমিক ৮৩৮ হেক্টর, তিনের অধিক ফসলি জমির পরিমাণ ৩২০ হেক্টর। মেহেরপুর জেলায় কৃষি ব্লকের সংখ্যা ৫৬টি, কৃষি বিষয়ক পরামর্শকেন্দ্র ৫৬টি, সয়েল মিনিল্যাব ১৪টি, বিএডিসি বীজ ডিলার ২৩ জন, বিসিআইসি সার ডিলার ৩০ জন, কোল্ড স্টোর ৩টি। এখানে নার্সারির সংখ্যা সরকারি ২টি ও বেসরকারি ২২০টি।

জেলা কৃষি বিভাগ আরও জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলার সেচাধীন জমির পরিমাণ ৫৯ দশমিক ৮৫৯ হেক্টর। গভীর নলকূপ মোট ৯৩টি (বিদ্যুৎ চালিত ৯১টি, ডিজেলচালিত ২টি), অগভীর নলকূপ মোট ৩০ হাজার ২২টি (বিদ্যুৎচালিত ১ হাজার ৭১৫টি, ডিজেলচালিত ২৮ হাজার ৩০৭টি), পাওয়ার  পাম্প মোট ১০টি (বিদ্যুৎচালিত ৪টি, ডিজেল চালিত ৬টি)।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, মেহেরপুরে বছরে খাদ্য শস্যের চাহিদা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৩ মেট্রিক টন (দানাদার), উদ্বৃত্ত খাদ্যের পরিমাণ ৮১ হাজার ৪৮৩ মেট্রিক টন। প্রধানত মেহেরপুরে ধান, পাট, গম, আলু, কচু, মসুর, ভুট্টা, সরিষা, পান, কলা, আনারস, কাঁঠাল ও শীতকালীন শাকসবজি উৎপন্ন হয়। এ জেলার উৎপাদিত খাদ্যপণ্য পার্শ্ববর্তী অন্যান্য অঞ্চলের খাদ্যঘাটতি কমাতে সহায়তা করতে সক্ষম বলেই উল্লিখিত প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ‘মেহেরপুর সদরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি  ২০২৮ সালের ৩০ জুন নাগাদ শতভাগ বাস্তবায়িত হবে।

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প এলাকায় অফিস কাম গবেষণাগার ভবন, আবাসিক ভবন, গ্রি হাউজ ও হিমাগার নির্মাণ করা হবে। বিভিন্ন ফসলের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও মূল্যায়ন এবং বারি ফসলের লাগসই ও টেকসই নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হবে।  মাঠ পর্যায়ের যন্ত্রপাতি, গবেষণাগার সরঞ্জামাদি, অফিস যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র এবং আইসিটি সরঞ্জামাদি কেনা হবে। বিভিন্ন ফসলের প্রজনন বীজ, টিএলএস,মানঘোষিত বীজ, ভাইন, কন্দ,গুড়িকন্দ, চারা, কলম উৎপাদনের ফলে বীজ,চারা,কলম উৎপাদন ও বিতরণ করা হবে। প্রদর্শনী স্থাপন এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন কর্মসূচি পাইলট প্রডাকশন প্রোগ্রাম (পিপিপি) স্থাপন এবং বিএডিসি থেকে ২০ একর জমি গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে, যা একনেকের অনুমোদন পেয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শস্য উপখাতের অন্যতম কৌশল উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদন উপকরণের দক্ষ ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট-২ খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষি প্রসারের সঙ্গে প্রকল্পটি প্রত্যক্ষভাবে সঙ্গতিপূর্ণ।

একনেকের অনুমোদন পেতে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে আধুনিক কৃষি গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার করা সম্ভব হবে। ফলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে, যা খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন,‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়বে, যা খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
টিভিতে আজকের খেলা (৩০ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৩০ এপ্রিল, ২০২৪)
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়