একুশে পদকপ্রাপ্ত, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘ড. নূরুন নবী: আজীবন মুক্তিযোদ্ধা’।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রজেকশন হলে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘এই প্রামাণ্যচিত্রে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিষয় উঠে এসেছে। বর্তমান সময়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হয়েছে এই মাধ্যমে। ঠিক একইভাবে ২০৫০ সালেও যে প্রজন্ম আসবে তাদেরকেও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখবে এই প্রামাণ্যচিত্র। তরুণ প্রজন্মকে আরও গভীরভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে সাহায্য করবে।’
ড. নূরুন নবী বলেন, ‘প্রামাণ্যচিত্রটির উদ্দেশ্য তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানো। মিলনায়তনে নতুন প্রজন্মের এতো উপস্থিতি দেখে আমি অভিভূত। আশা করি এটি তৈরির উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।’
প্রামণ্যচিত্রের পরিচালক নাদিম ইকবাল বলেন, ‘কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল আমাদের জন্য। অনেক জায়গা থেকে সহযোগিতা ছিল, আবার অসহযোগিতাও ছিল। এক বছর লেগে থাকতে হয়েছে।’
কানাডাপ্রবাসী কবি রুমানা চৌধুরী বলেন, ‘শুধু দেশের মানুষ নয়, বিদেশিদের কাছেও প্রামাণ্যচিত্রটি প্রশংসিত হবে বলে আশা করি।’
সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।
উল্লেখ্য, একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী, রাজনীতিক, অ্যাকটিভিস্ট ও লেখক ড. নূরুন নবীর বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামমুখর অনুকরণীয় জীবনের ওপর ভিত্তি করে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউয়ে ড. নবীকে টাঙ্গাইল মুক্তিবাহিনীর ব্রেন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে তার বিশেষ দায়িত্ব ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেলদের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করে অস্ত্র সংগ্রহ ও বহন করে নিয়ে আসা। তিনি যমুনা নদী দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনবার নৌকা করে অস্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। ড. নবী দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকট সমাধানের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।