২০১৩ সালে তৎকালীন বিরোধী দলের প্রধান ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে বালুর ট্রাক রেখে প্রতিবন্ধকতা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) গুলশান থানায় এ মামলা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লতিফ হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. শরীফুল ইসলাম শাওন। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গুম, খুন ও মিথ্যা মামলার তথ্য সেলে কাজ করছেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ওবায়দুল কাদের, তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার একেএম শহিদুল হক (সাবেক আইজিপি), তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি আসাদুজ্জামান মিয়া (সাবেক আইজিপি), সাবেক এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ তৎকালীন পুলিশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, “২০১৪ সালে একতরফা ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন আয়োজন করে আওয়ামী লীগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচন। এরপর প্রতিবাদে বিএনপিসহ সব বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের রূপরেখা হিসেবে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ অব ডেমোক্র্যাসি’ শিরোনামে সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। ওই সমাবেশ পণ্ড করতে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে বালুভর্তি পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রাক বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজা বাসভবনের গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রাখেন উল্লিখিত আসামিরা।”
“তারা রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান-২-এর ফিরোজা বাসভবনের গেট বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অন্যায়ভাবে আসামিরা রাস্তার ওপর অবৈধভাবে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জনসাধারণের চলাচল ও বেগম খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সেজন্য রাস্তার ওপর ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্র অধিকারকে হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। যা সংবিধান পরিপন্থি ও গণতন্ত্রের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ।”
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, “কর্মসূচি অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে গুলশান-২ ফিরোজা ভবন থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। সেদিন বেআইনি ও অবৈধভাবে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অন্তর্ঘাতকমূলক কার্যকলাপ করার জন্য উল্লিখিত আসামিরাসহ অন্যান্য সাদা পোশাকধারী ও পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় অজ্ঞাত অফিসার ও সদস্যরা মিলে রাস্তায় বের হতে বাধা দেয় এবং অবৈধভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আটক করে রাস্তার আশপাশে বালুর ট্রাকসহ অন্যান্য ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড করে আটক করে রাখে, যাহা সংবিধান ও গণতান্ত্রিক পরিপন্থি।”
“শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগদান করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও আসামিরা অবৈধভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বেআইনিভাবে আটকে রাখে অভিযোগ করে বলা হয়, আসামিরা বেগম জিয়াকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যেতে না দেওয়া, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পণ্ড করা, সংবিধান লঙ্ঘন করা ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে অবৈধভাবে আটক রাখার অপরাধ করেছে।”