বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সারা দেশের মতো রাজধানীতেও শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসহ চার দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন তারা। বুধবার (২৮ মে) থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
অনশন কর্মসূচিতে আসা তথ্য আপা প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) কর্মীরা বলেন, তারা মাঠ পর্যায়ে বিগত প্রায় ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন নারীর ক্ষমতায়নের জন্য। আর এক মাস পরে তাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় দুই হাজার নারী একযোগে বেকার হয়ে যাবেন। জুনের পর থেকে এই জনবল এবং তাদের পরিবার এক অসহনীয় দুর্দশায় পড়তে যাচ্ছে।
তারা জানান, তারা উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৩ ধাপে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছিলেন ২০১৮ সালের নভেম্বরে। ৪৯২টি উপজেলায় তথ্যকেন্দ্রে ১ জন করে তথ্যসেবা কর্মকর্তা (দশম গ্রেড), ২ জন তথ্যসেবা সহকারী (১৬তম গ্রেড) ও ১ জন অফিস সহায়ক ( ২০তম গ্রেড) মোট ১ হাজার ৯৬৮ জন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত রয়েছেন। তারা তৃণমূল নারীদের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, আইন, জেন্ডার, ব্যবসা, পরিবার পরিকল্পনা এবং সাইবার সিকিউরিটি— এই ৮টি বিষয়ে জরুরি তথ্য সরবরাহ ও সহায়তা দিয়ে থাকেন।
এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগপত্র অনুযায়ী বেতন না দিয়ে প্রকল্পের সাবেক পরিচালক মিনা পারভীন বেতন কমিয়ে দেন। এ বিষয়ে কোনও লিখিত চিঠিও দেওয়া হয়নি।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা তথ্য আপা প্রকল্পের কর্মী ফেরদৌসী জান্নাত বলেন, সারা দেশ থেকে আমাদের কর্মীরা আসছেন। আমাদের রাজনৈতিক ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু আমরা অরাজনৈতিক। জীবিকার তাগিদে আমরা এখানে এসেছি। আমরা শুধু চাকরির নিশ্চয়তা চাই। আমাদের রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্য নেই।
আমিনা খানম নামের একজন কর্মী বলেন, আমাদের ১৬ গ্রেডের তথ্যসেবা সহকারীদের বেতন ২০ গ্রেডের অফিস সহায়কের থেকে কম। যেটা চরম বৈষম্য এবং অসম্মানজনক। রাজস্বের আশ্বাস দিয়েও কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ১০০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। প্রকল্পের সফলতার হার ৯০ শতাংশের বেশি। এরপরও আমাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে পদ সৃজনের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা; যেহেতু রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য সময়ের প্রয়োজন— তাই প্রয়োজনীয় সময় ৩-৫ বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা; পদ তৈরি করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্ভব না হলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শূন্য পদের ভিত্তিতে সমগ্রেডে আত্তীকরণ করা এবং কর্তনকৃত বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া।