বাংলাদেশে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তুরস্ককে আবারও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. কেমাল মেমিসওলো’র সঙ্গে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হকের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ অনুরোধ জানানো হয়।
সোমবার (১ জুন) দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তুরস্ক কর্তৃক পূর্বে প্রস্তাবিত বাংলাদেশে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ বিষয়টি উত্থাপন করেন।
জানা যায়, কয়েক বছর আগে থেকেই এই হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ না করায় হাসপাতালটি আলোর মুখ দেখেনি। বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সাম্প্রতিক তুরস্ক ভ্রমণকালীন, বাংলাদেশ দূতাবাস হাসপাতালের জন্য জায়গা বরাদ্দবিষয়ক সমস্যার কথা তুলে ধরলে, তিনি নিশ্চয়তা প্রদান দেন যে, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবারও তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, শিগগিরই আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তুরস্ক কর্তৃক হাসপাতালটি নির্মিত হলে— সেটি যেন সম্পূর্ণ বাংলাদেশিদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতে পারে, এমনভাবে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে। এছাড়া তিনি জানান, এটির নির্মাণ হবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় পরিবর্তন এবং জটিল রোগীদের তখন আর বিদেশমুখী হতে হবে না।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত সাত জন বাংলাদেশির তুরস্কে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্ক সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়া তিনি প্রস্তাব করেন, তুরস্ক প্রদত্ত বিশেষ সুবিধার আওতায় সম্ভব হলে আরও আহত বাংলাদেশিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য তুরস্কে আনার সুযোগ দিতে। প্রতিউত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহত রোগীদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসায় সুস্থ করা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়, তাদের একটি তালিকা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশি চিকিৎসক এবং নার্সদের তুরস্কে প্রশিক্ষণ প্রদান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানে তুরস্ক হতে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল প্রেরণ এবং অভ্যুত্থানে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন, তাদের কৃত্রিম অঙ্গ স্থাপনে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
উভয় দেশের কল্যাণে স্বাস্থ্য খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য পারস্পরিক স্বদিচ্ছা এবং যৌথ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বৈঠকটি শেষ হয়।