জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা থাকায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের একটি জিপ গাড়ি ও ৯ ব্যাংক হিসাব এবং তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার ১২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৩ জুন) দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে পৃথক দুটি আবেদন করেন সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
হাছান মাহমুদের ৯ ব্যাংক হিসাবে আছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৪ টাকা এবং তার স্ত্রীর ১২টি ব্যাংক হিসাবে রয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ২২ হাজার ৪৬১ টাকা।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ১ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন।
এছাড়া তার নিজ, যৌথ ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৬৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(১) (ঘ) ৩৫(১) (৪) ধারা লঙ্ঘন করায় ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়েছে। আসামি তার নামে অর্জিত স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর বা দলিল সম্পাদন বা অন্য কোনও পন্থায় মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তর সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির নামে অর্জিত অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধকরণ করা আবশ্যক।
নূরান ফাতেমার বিরুদ্ধে আবেদনে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকা মূল্যর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং নূরান ফাতেমা তার নিজ, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত মোট ৫৬টি হিসাবে সর্বমোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেন এর মাধ্যমে রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মানিলন্ডারিং এর সম্পৃক্ত ধারায় শান্তিযোগ্য অপরাধ করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শান্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। অপরদিকে তার স্বামী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ মন্ত্রী থাকার সময় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাব ও আর্থিক সহায়তায় তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার নামে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেন এবং তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার নিজ, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত মোট ৫৬টি হিসাবে মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ 'দুর্নীতি ও ঘুষ' সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে এর রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে সর্বমোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেন করিয়ে ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(১) (ঘ) ও ৫(১) (২) ধারা লঙ্ঘন করায় ৫(২) ধারায়, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামি তার নামে অর্জিত স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর বা দলিল সম্পাদন বা অন্য কোনও পন্থায় মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তর সম্ভবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির নামে অর্জিত স্থাবর সম্পদ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা করা আবশ্যক।