জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, সংশোধন ও প্রদানে হয়রানির অভিযোগে দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৩ জুন) দুদকের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দেশব্যাপী নির্বাচন অফিসগুলোতে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও সংগ্রহে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে (২৩ জুন) দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে নির্বাচন অফিসের ১৩টি জেলা কার্যালয়ে একযোগে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও সংগ্রহে সেবাগ্রহীতার নিকট ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মো. তানজির আহমেদ জানান, রংপুর জেলা নির্বাচন অফিসে ঘুষ দাবি, হয়রানি ও অসহযোগিতার অভিযোগে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে অভিযান চালায়। পাসপোর্টের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে গিয়ে সেবাগ্রহীতারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানান। তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
রাজশাহী জেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশনের জন্য সরকারি ফি ২৩০ টাকা অনলাইনে জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কিছু অসাধু কর্মচারী রশিদ ছাড়াই নগদ অর্থ গ্রহণ করে ভেরিফিকেশন করছেন মর্মে অভিযানকালে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়।
কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসে ২০২২ সালে করা আবেদন ২০২৫ সালে এসে খারিজ করা হয়েছে মর্মে দেখা যায়। দুদকের টিম জানতে পারে, বহুদিন ঘুরেও সেবাগ্রহীতারা সেবা পাচ্ছেন না। একাধিক ভুক্তভোগী নারীসহ আবেদনকারীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন অফিসে দুর্নীতি, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে পরিচালিত অভিযানকালে সেবাগ্রহীতা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য নেওয়া হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হয়।
পাবনা জেলা নির্বাচন অফিসে অনলাইন আবেদন অনুমোদনে অস্বাভাবিক বিলম্বের সত্যতা পাওয়া যায় এবং সমাধানের উদ্যোগ নিতে বলা হয়।
নওগাঁ জেলা নির্বাচন অফিসে টিম ছদ্মবেশে উপস্থিত হয়ে অফিস পর্যবেক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে সেবা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে।
দিনাজপুর জেলা নির্বাচন অফিসে দুদক টিম এনআইডি সংশোধনের ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ শ্রেণির আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে এবং উপস্থিত সেবাগ্রহীতাদের সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়।
বরিশাল জেলা নির্বাচন অফিসে সেবাগ্রহীতারা জানান, প্রায়ই ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে এসে তারা সার্ভার সমস্যার সম্মুখীন হন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
এছাড়াও বগুড়া, জামালপুর, পটুয়াখালী, ঠাকুরগাঁও ও পিরোজপুর জেলায় একযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেবাপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
প্রতিটি জেলার এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।