সারা দেশে কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন, বায়ুদূষণকারী অবৈধ ইটভাটা ও স্টিল মিল, শব্দদূষণ, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য নির্গমন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সীসা ও ব্যাটারি রি-সাইক্লিং কারখানা, জলাশয় ভরাট, টায়ার পাইরোলাইসিস, চারকোল কারখানা এবং নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে মোট ১ হাজার ১১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে ২ হাজার ৬৩৭টি মামলার মাধ্যমে ২৫ কোটি ৪২ লাখ ৮৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
দেশব্যাপী পরিবেশ দূষণ রোধে পরিবেশ অধিদফতরের অভিযানে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযানে এই জরিমানা আদায় করা হয়।
এসময় ৪৮২টি অবৈধ ইটভাটার চিমনি ভেঙে দিয়ে সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২১৬টি ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়, ১৩২টি ইটভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৮৬টি পরিবেশদূষণকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং দুজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সীসা ও ব্যাটারি গলানোর দায়ে ৬টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ ট্রাক পরিমাণ যন্ত্রপাতি জব্দ করে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে রবিবার (২৯ জুন) খুলনা জেলায় যানবাহনের কালো ধোঁয়া নির্গমনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। অভিযানে একটি মামলায় ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং কয়েকজন চালককে সতর্ক করা হয়।
একইদিনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০০৬ অনুসারে লালমনিরহাট, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা ও নাটোর জেলায় ৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ১৭টি মামলার মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। অভিযানে ২৭টি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট চালকদের সতর্কতামূলক বার্তা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে লালমাটিয়া ও খিলগাঁও এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী দ্বারা বায়ুদূষণের দায়ে দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে তিনটি মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে সতর্ক করা হয় এবং খোলা নির্মাণ সামগ্রী তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ করা হয়।
এছাড়াও রবিবার (২৯ জুন) খুলনা ও রাজবাড়ী জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রি, সরবরাহ ও বাজারজাত করার অভিযোগে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে ৬টি মামলায় সাড়ে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ৫৪৯ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। অভিযানে বিভিন্ন সুপারশপ ও দোকান মালিককে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
এছাড়াও পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন ও অবৈধভাবে পরিচালিত কয়লা উৎপাদনকারী কয়েকটি চারকোল কারখানার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ জেলায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়। অভিযানে প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্নার ভেঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিভিয়ে কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।