X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মেট্রোরেলে দিনটি ছিল তাদেরই

রিয়াদ তালুকদার
৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৩আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪২

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রায় ৭০০ শিশু-কিশোর মেট্রোরেল ভ্রমণ করেছে। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ছিল এই আয়োজন। এই শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছিল জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার বিজয়ী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশু এবং পথশিশুরা। ভ্রমণের সময় শিশুদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল। সবার চোখে-মুখে ছিল আনন্দ, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনে বিস্ময়ের ছাপ। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ শিশু-কিশোর, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন।

সোমবার সাড়ে ১১টার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এসে দাঁড়ায়। পরে লাইন ধরে শিশুরা প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। প্ল্যাটফর্ম থেকে মেট্রোরেলে ওঠার জন্য তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ভ্রমণের টিকিট। টিকিট পাঞ্চ করতে সহায়তা করেন স্কাউট সদস্যরা। সবাই যে যার টিকিট হাতে নিয়ে পাঞ্চ করে ভেতরে ঢোকে।

মেট্রোরেলে দিনটি ছিল তাদেরই

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত পথশিশু ও পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ১৩৫ জন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে ৪৭৪ জন, আজিমপুর ও কেরানীগঞ্জের শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে ২০০ জন শিশু-কিশোর এই মেট্রোরেলে ভ্রমণের সুযোগ পায়। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ে বাসে করে তাদের আগারগাঁও স্টেশনে নিয়ে আসে।

মেট্রোরেল চলাচলের নির্ধারিত সময়ের পর দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশন থেকে শিশুদের নিয়ে নির্ধারিত ট্রেনটি ১২ মিনিটে উত্তরা স্টেশনে পৌঁছায়। যাত্রাপথে ট্রেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৪ কিলোমিটার। স্টেশন থেকে নেমে নির্ধারিত জায়গায় টিকিট রেখে বের হয়ে আবার ঢোকার লাইনে দাঁড়ায় শিশুরা। আবারও তাদের হাতে টিকিটি তুলে দেওয়া হয়। সেই টিকিট পাঞ্চ করে তারা আবার প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে শিশু-কিশোর ও অভিভাবকসহ অন্যদের নিয়ে ট্রেনটি ১৩ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে এসে পৌঁছায়। এ সময় ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। যাওয়া-আসার প্রতিটি মুহূর্ত গান গেয়ে উদযাপন করে শিশুরা। এছাড়া নিজেদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখে ছবি তুলে।

মেট্রোরেলে দিনটি ছিল তাদেরই

যাত্রাপথে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র কাওরান বাজারের শিশু রাজন বলে, আমার খুব ভালো লাগছে। সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও আসতে পেরেছি। সে জন্য আরও ভালো লাগছে।

কাওরান বাজার পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশু আরিফুলের ভাষ্য, টেলিভিশনে মেট্রোরেল দেখেছি। আজ উঠলাম। অনেক ভালো লাগছে।

আজিমপুর শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশু ভ্যালেন্তিনা বলেন, আমার অনেক ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে এসেছি, অনেক ভালো লাগছে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির রংপুর বিভাগ থেকে আসা শিশু নাসরিন আক্তার ময়না বলেন, আমার আশা পূরণ হয়েছে। ভাবতাম কবে মেট্রোরেলে চড়তে পারবো! সেই ভাবনা সত্যি হয়েছে।

মেট্রোরেলে দিনটি ছিল তাদেরই

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর থেকে আসা লিপি বলেন, আমি আমার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।

মানিকনগর থেকে সন্তানকে নিয়ে আসা অভিভাবক সাবির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্যস্ততার জন্য আসতে পারিনি। মন্ত্রণালয় ও সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সন্তানকে মেট্রোরেলে চলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সরকার ও মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকি ইনাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এখানে অনেক শিশু রয়েছে, যারা এখন পর্যন্ত মেট্রোরেল দেখেনি। তারা আজ মেট্রোরেল দেখার সুযোগ পেয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. রেজাউল কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ যে শিশুদের মেট্রোরেলে ভ্রমণ করানো হয়েছে তাদের মধ্যে তিন ধরনের শিশু রয়েছে। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার বিজয়ী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশু এবং পথশিশুরা। তারা আজ মেট্রোরেলকে জানছে, বাংলাদেশকে জানছে। আমাদের আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুরা এসব বিষয়ে জানার সুযোগ পাচ্ছে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকি ইনামসহ অন্যরা

ঢাকা ম্যাস রেপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন ১-এর উপ-প্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়া আরও যারা শিশু-কিশোরদের ভ্রমণ করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই। এ বিষয়টি আমি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। আধুনিক প্রযুক্তির পরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে, এ বিষয়টি সম্পর্কে শিশুরা জানতে পারলো।

মেট্রোরেল আগারগাঁও স্টেশনের ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান বলেন, কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মেট্রোরেলে চড়াতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। কোনও সমস্যা ছাড়াই তারা আগারগাঁও থেকে উত্তরা এবং উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পেরেছে। বাংলাদেশে অত্যাধুনিক একটি পরিবহন ব্যবস্থা চালু হয়েছে এ বিষয়টি তারা স্বচক্ষে দেখলো এবং সশরীরে ভ্রমণ করে জানতে পারলো। নির্ধারিত সময়ের পর আমরা শিশু-কিশোরদের আগারগাঁও থেকে উত্তরা এবং উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভ্রমণ করাতে পেরেছি।

 

 

/আরটি/আরকে/এমওএফ/
সম্পর্কিত
তীব্র গরমেও শীতল করমজল!
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
কলকাতায় চালু হলো চালকবিহীন মেট্রো
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা