শুষ্ক মৌসুম শুরুতে কিউলেক্স মশার প্রকোপ বাড়ায় সপ্তাহব্যাপী (শুক্রবার ছাড়া) ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি। লার্ভিসাইডিং (লার্ভা ধ্বংস) ও ফগিং (ধোঁয়া দিয়ে মশা নিধন) পদ্ধতিতে এই কার্যক্রম চালানো হবে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে এসে নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘বর্তমানে মশা মারতে ভুল পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে, এতে মশা মরে না। শিগগিরই আধুনিক পদ্ধতিতে এলাকাভিত্তিক মশার প্রজাতি নির্ণয় আচরণ গবেষণা করে ওষুধ প্রয়োগ করতে ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। আপাতত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলাপ করে তাদের ল্যাব কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে ডিএনসিসির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন মিরপুরের বাইশটেকি এলাকায় সপ্তাহব্যাপী এ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। শুরু হওয়া বিশেষ এই অভিযান চলবে ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ সময় উদ্বোধনে অংশ নেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জামাল মোস্তফা, অঞ্চল-২-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান।
মেয়র বলেছেন, ‘এই বিশেষ অভিযানের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো জনগণকে সচেতন করা। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি জনগণ সচেতন হয়ে দায়িত্ব পালন করলেই আমরা মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।’
ডিএনসিসি থেকে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রমে ৪০০X৪০০ গ্রিড পদ্ধতিতে প্রতি ওয়ার্ডকে ছয় ভাগে ভাগ করে প্রতি এক ভাগে এক দিন নিবিড়ভাবে লার্ভিসাইডিং ও ফগিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ কার্যক্রমের আগে শনাক্ত করা মশার প্রজননস্থল হিসেবে চিহ্নিত সব হটস্পটে ব্যাপকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে হটস্পট অপসারণ করা হবে।’
অভিযানের উদ্বোধনকালে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। এখন বৃষ্টির মৌসুম শুরু হয়েছে। তাই আমাদের রুটিন কাজের পাশাপাশি সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছি।’
এই বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিএনসিসি থেকে নিয়মিত মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়, তবে ডিএনসিসি থেকে যে গবেষণার কথা বলা হয়েছে, তার মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হলে কার্যকর ফলাফল পাওয়া যেত। পাশাপাশি মশা নিধনে তাদের যে প্রচেষ্টা, তা সার্থক হতো।’