ঈদুল আযাহার দশ দিনের দীর্ঘ ছুটি শেষ হতে চলছে শনিবার (১৪ জুন)। এর মধ্যেই ঢাকার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায় শুক্রবার (১৩ জুন) দর্শনার্থীদের পদচারণায় ছিল মুখর।
এদিন রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পরিবার-সন্তানদের নিয়ে দলবেঁধে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। তবে, গরম বেশি হওয়ায় অনেকেই আইসক্রিমের দোকানে ভিড় করছেন বা বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
কুয়াকাটা থেকে ঢাকায় বেড়াতে এসেছে শিশু জুবায়ের। মায়ের সঙ্গে চিড়িয়াখানায় আসে সে। তার সঙ্গে কথা হলে জানায়, চিড়িয়াখানায় ঘুরে তার সবচেয়ে ভালো লেগেছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
এসময় পাশে বসা জুবায়েরের মা জাহানারা বেগম বলেন, চিড়িয়াখানা অনেক বড়। পুরাটা ঘুরে দেখতে অনেক হাঁটতে হয়। পায়ে ব্যথা হয়ে গেছে। অনেক গরম আজকে, তবুও ঘুরে অনেক ভালো লেগেছে।
ময়মনসিংহ থেকে ছেলের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঢাকায় আর চিড়িয়াখানায় আসেন আমিনা নক্রেক। তিনি বলেন, জীবনে প্রথমবারের মতো চিড়িয়াখানায় এসে খুবই ভালো লেগেছে। বাঘ, সিংহ, জিরাফ, হরিণ, সাপ সবকিছু আমার অনেক ভালো লেগেছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে মো. মিনহাজ হোসেন। তিনি বলেন, ছোট বেলায় এসেছিলাম চিড়িয়াখানায়, প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আগে। আজকে আবার আসলাম। খুবই ভালো লাগছে। বাসার সবাই মিলে আজকে আবার এসেছি। ছুটি ছিল বলে সবার একসঙ্গে আসা সম্ভব হয়েছে। নইলে হয়তো একসঙ্গে বেড়ানো সম্ভব হতো না।
এদিকে চিড়িয়াখানার শিশুপার্কে ছিল শিশুদের সরব উপস্থিতি। সেখানে ম্যারি-গো- রাউন্ড ও ট্রেনে চড়ার টিকিক কাউন্টারে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। এছাড়াও লাইন বেধে শিশুদের স্লিপারে খেলতেও দেখা যায়।
তবে অতিরিক্ত গরম ও ঈদের দীর্ঘ ছুটির জন্য এবার দর্শনার্থীর সংখ্যা অন্যান্য বারের তুলনায় কম ছিল বলে জানান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. আতিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঈদের সময় ভ্যাপসা গরম আর বড় ছুটির কারণে এবার তুলনামূলক দর্শনার্থীর সংখ্যা কম। এবার ঈদের প্রথম দিন প্রায় ২০ হাজার দর্শনার্থী এসেছেন। এছাড়া অন্য দিনগুলোতে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার দর্শনার্থী এসেছেন। আর আজকে এখন পর্যন্ত (বিকাল সাড়ে ৪টা) ২০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছেন।
তিনি বলেন, সাধারণত রোজার ঈদের তুলনায় কোরবানির ঈদের সময় দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হয়। কোরবানি ঈদের সময় বেশিরভাগ মানুষ গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। যেকারণে দর্শনার্থী সংখ্যা কম হয়।
ডা. মো. আতিকুর রহমান জানান, চিড়িয়াখানায় ১৩৪ প্রজাতির ৩ হাজার ৩৬৫টি প্রাণী রয়েছে। এরমধ্যে বাঘ রয়েছে ১৩টি ও গন্ডার রয়েছে একটি।