X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৮ জুন ২০২১, ২০:৪৫আপডেট : ০৮ জুন ২০২১, ২০:৪৫

নগর জীবনে স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি অন্যতম কারণ হলো শব্দদূষণ। নির্মাণকাজ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে একদিকে জনগণ যেমন শ্রবণক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছেন, সেইসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী, শব্দের সহনশীল মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও আমরা তা অনুসরণ করতে পারছি না। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (৮ জুন) পরিবেশ অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আলোচনায় এসব বক্তব্য উঠে আসে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনজিও-বিষয়ক ব্যুরো ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. শাহাদাৎ হোসাইন। অন্যদের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক আশরাফউদ্দিন, পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক হুমায়ুন কবীরসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সফলতা আনা সম্ভব। মাটি, পানি, বায়ুদূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে পরিবেশ অধিদফতর ২০২০-২০২২ মেয়াদে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী, শব্দের সহনশীল মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও আমরা তা অনুসরণ করতে পারছি না। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’

আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা। তিনি বলেন, ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি সংস্থাগুলো বিভিন্ন ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন: পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার্থে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজন করা, নীরব ও আবাসিক এলাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শব্দদূষণ বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা ইত্যাদি।’

বিশেষ অতিথি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মেখলা সরকার বলেন, ‘শব্দদূষণের ফলে শ্রবণক্ষমতা নষ্ট হয় তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এর মানসিক প্রভাব নিয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন নই। শব্দদূষণের ফলে মানুষের মধ্যে উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়। যা ধীরে ধীরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। আমরা যদি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারি তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনেক বড় ঝুঁকি তৈরি হবে।’

বিশেষ অতিথি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান প্রফেসর শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি বলেন, ‘অতিরিক্ত হেডফোনের ব্যবহার, গাড়ির অনাকাঙ্ক্ষিত হর্ন, নির্মাণকাজের শব্দ ইত্যাদি তাদের ধীরে ধীরে বধিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের প্রচারণার ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।

আয়োজনে বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন, যেমন: তৃণমূল পর্যায়ে শব্দদূষণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, যুবসমাজকে এ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, লিফলেট বিতরণ, বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ, নিয়মিত মনিটরিং, লঞ্চের ইঞ্জিনে সাইলেন্সারের ব্যবহার নিশ্চিত, মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, আবাসিক এলাকা থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলা, মিডিয়ায় প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের উদ্বুদ্ধ করা, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে ২৪টি জেলার প্রায় ৬০টি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

 

 

/এসএনএস/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
একদিন আগে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত
একদিন আগে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত
সরকার বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর: পরিবেশমন্ত্রী
সরকার বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর: পরিবেশমন্ত্রী
শীর্ষ ঋণখেলাপি লস্করের সম্পত্তি ওসির জিম্মায় দিলেন আদালত
শীর্ষ ঋণখেলাপি লস্করের সম্পত্তি ওসির জিম্মায় দিলেন আদালত
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেও হিন্দুত্ববাদে ভরসা মোদির?
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেও হিন্দুত্ববাদে ভরসা মোদির?
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র