X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সবুজ বেষ্টনীর অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি বন অধিদফতর

সঞ্চিতা সীতু
৩০ নভেম্বর ২০২২, ১০:০০আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৪৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত গ্রিন বেল্ট বা সবুজ বেষ্টনীর অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি বন অধিদফতর। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার বিষয়ে কোথায় কী পরিমাণ কাজ  হয়েছে, সে বিষয়ে বন অধিদফতরের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টেকসই বন ও জীবিকা উন্নয়নের জন্য বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা নতুন চরসহ উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন করার উদ্যোগ হাতে নেয় সরকার। সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্যই ছিল প্রতিবেশের পুনরুদ্ধার ও ইকো-ট্যুরিজমের উন্নয়ন।

২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সবুজ বেষ্টনী গড়তে হবে, যেগুলো মাটি ধরে রাখে। যেমন- আমাদের ঝাউগাছ, খেজুরগাছ, তালগাছ এগুলো আমাদের রোপণ করতে হবে। এই ব-দ্বীপটাকে (বাংলাদেশ) বাঁচাতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর ২০১৫- ২০১৬ অর্থবছর থেকে এখনও পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ৪৬ হাজার ৬৭৮ হেক্টর ম্যানগ্রোভ এবং ৩ হাজার ৩১২ হেক্টর নন-ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৩৭০ কিলোমিটার  গোলপাতা এবং ৯ হাজার ৬২৬ কিলোমিটার বাঁধের পাশে বনায়ন করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, গত ১৯৬০ দশক থেকে শুরু করে অদ্যাবধি মোট ২ লাখ ৫২ হাজার ১২০ হেক্টর উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন করা হয়েছে।

বন বিভাগের সূত্রমতে, উপকূলীয় এলাকার ১২ লাখ ৩৬ হাজার একর ভূমি বনায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই দশমিক ৪৭ একর সমান এক হেক্টর হলে এতে প্রায় ৫ লাখ হেক্টর জমিতে সবুজ বেষ্টনী করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বন বিভাগ এখন অবধি সব মিলিয়ে বনায়ন করতে পেরেছে ২ লাখ ৫২ হাজার হেক্টরে। অর্থাৎ এখনও অর্ধেক জমিই রয়ে গেছে বনায়নের বাইরে।

গত ৬২ বছরে ২ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বনায়ন করার অর্থ হচ্ছে বছরে বনায়ন করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৪ হেক্টর। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর এই হার বেড়েছে। ২০১৫-১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বনায়ন করা হয়েছে। অর্থাৎ গত সাত বছরে বনায়নের হার আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে।

বন অধিদফতর বলছে, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা এবং সমুদ্র ও নদীর মোহনা এলাকায় জেগে ওঠা নতুন চর স্থায়ী করার লক্ষ্যে বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সমুদ্রের কাছাকাছি নিকট দূরত্বে জেগে ওঠা চরের ভূমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে একত্রীকরণ করে সবুজ বেষ্টনী তৈরির জন্য বন অধিদফতর তিনটি প্রকল্প বস্তবায়ন করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এখনও উপকূলের অনেক জায়গা বনায়নের বাইরে রয়েছে। এছাড়া প্রতি বছরই নতুন নতুন চর জাগছে। এসব চরের জমিকে আবাদী করে তোলার জন্য সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টির কোনও বিকল্প নেই। এতে মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পর্যটন খাত বিকশিত হবে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ উপকূলের কোন কোন চরে বনায়ন করা হয়েছে, তা জানানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রিন বেল্ট বাস্তবায়নে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা রয়েছে।’ এজন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার পরমর্শ দেন তিনি।

 

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা