X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশখালীতে প্রতিবাদী মানুষের ওপর জুলুম চলছে: আনু মুহাম্মদ

উদিসা ইসলাম
১৯ মে ২০১৬, ১৭:১৮আপডেট : ১৯ মে ২০১৬, ১৮:০৬

আনু মুহাম্মদ বাঁশখালীর গণ্ডামারার বড়ঘোনায় ৬০০ একর জমিতে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের সহায়তায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে এস আলম গ্রুপ। ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়রা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এস আলম গ্রুপ পুনর্বাসনের সুযোগ না দিয়ে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে গত ৪ এপ্রিল গ্রুপের লোক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আন্দোলনকারী চার জন নিহত হন।
গণ্ডামারাবাসী বলছেন, তারা একরকম জেলখানায় আছেন। তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও বিজিবি। গত পাঁচদিন ধরে হঠাৎ হঠাৎ আক্রমণ করা হচ্ছে তাদের ওপর। গুলি ও নির্যাতনে ইতোমধ্যে আহত হয়েছেন অনেকে। বের হতে গেলে আটক করা হচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের ওপর অনিয়ম, জালিয়াতি, ভূমিগ্রাস এবং জোরজুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে তেলগ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা কমিটি। বাঁশখালী নিয়ে কথা হয় কমিটির সমন্বয়ক আনু মুহাম্মদের সঙ্গে।
আপনারা গ্রামবাসীর ওপর প্রথম দফায় হামলার পর সেখানে গিয়েছিলেন। এখন গ্রামবাসীর অভিযোগ কী?
এ দফা ঘটনার শুরু ১৪ মে থেকে। হাজার খানেক পুলিশ সদস্য গ্রামের প্রবেশমুখ থেকে ফিরে যায়। এর পরদিন ১৫ মে সকালবেলা গ্রামের ভিতর ঢুকলে গ্রামের নারীরা সামনে দাঁড়ালে তারা ফিরে যায় ঠিকই কিন্তু ভোররাতে অতর্কিতে হামলা করে। সেই সময়ই লিয়াকতের বাড়ি পর্যন্ত হাজির হয়ে তার বৃদ্ধ বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় ফাঁকা গুলি করেছে বলেও গ্রামবাসী জানিয়েছে এবং প্রায় ১৫ জনো মতো জখম হয়েছে। অথচ এতো বড় সংবাদ গণমাধ্যমে তখনই এলো যখন লিয়াকতের বাবা গ্রেফতার হলো। তার আগে এবং পরে অনবরত যে জুলুম চলছে সেটা নিয়ে কোনও সংবাদ আমরা দেখছি না।
বাঁশখালীতে হামলার পর এলাকা পরিদর্শনে আনু মুহাম্মদ এতো পুলিশ যদি যায়, তাহলে সেটা গণমাধ্যমে না আসার কারণ কী হতে পারে?
এটা ব্যাখ্যা করা মুশকিল। উপকূলীয় অঞ্চলে আটক, খুন জখম হচ্ছে। পত্রপত্রিকায় সে খবর না আসা মানে হয় সরকারের প্রভাব, নাহলে এস আলম গ্রুপের প্রভাব। একটা কোম্পানি যা খুশি তাই করবে আর আমরা চুপ করে থাকবো, সেটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বাঁশখালীতে তেল গ্যাস কমিটির সাংগাঠনিক শক্তি না থাকায় বিষয়টি নিয়ে আমরা শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারছি না। কিন্তু আমরা জনগণকে মূল বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।

শখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে কী ধরনের ক্ষতি হবে, আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী বলে?

বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হলে এ এলাকার পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। এক পক্ষকে খুশি করতে সরকার বাঁশখালী বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কোনও ধরনের সমীক্ষা না করেই পরিবেশের ক্ষতি করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হলে এ এলাকার পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। আর এখন ক্ষতি হবে কি হবে না সেটা বিবেচনা পরের বিষয়। দ্বিতীয় দফায় এখন যে হামলা জুলুম চালানো হচ্ছে সেটার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয় তারা যা করছিলো তা অন্যায়, গায়ের জোরে করতে চাওয়া প্রকল্প। ফলে, ওখানে কী ক্ষতি হবে সেটা বিবেচনায় নেওয়ার আগে সেখানকার মানুষদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

বাঁশখালীতে সংঘর্ষ আপনাদের পক্ষ থেকে এখন দাবিগুলো কী?
সেখানকার ডিসি বলেছিলেন, মানুষের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করা হবে। সেই কথা দিয়ে তিনি তা রাখলেন না কেন? তিনি বড়পুকুরিয়া প্রকল্প দেখিয়ে আনবেন এবং সেটার অভিজ্ঞতায় বাঁশখালীর প্রকল্প কতটা ক্ষতিকর তা নির্ণয় করবেন জানিয়েছিলেন। বড়পুকুরিয়া ঘুরে এসেছেন বলে জেনেছি, কিন্তু কী দেখে এলেন তা জানানো হলো না কেন? আমাদের কাছে বিষয়টা পরিষ্কার। তারা বুঝতে পেরেছে, এই এলাকা কী ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হোক এবং এখনই জোর জুলুম গ্রেফতার নির্যাতন মিথ্যা মামলা বন্ধ করা হোক। এরপর স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিবেশ সমীক্ষা সম্পন্ন করে জনসম্মতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
ফটো ক্রেডিট: ফাতিন চৌধুরী
এজে/

সম্পর্কিত
আলাপচারিতায় ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম ও মানস ঘোষমুজিবনগরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবাদ সংগ্রহ
করারোপ নীতি শিক্ষা সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করবে: সলিমুল্লাহ খান
বাংলা ট্রিবিউনকে ওয়াসিকা আয়শা খান‘নারীরা যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন, এর নেপথ্যে শেখ হাসিনা’
সর্বশেষ খবর
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই