খুলনার খালিশপুরের যুবক শাহজালাল চোখের আলো আর ফিরে পাবেন না। চিকিৎসার শুরুর পর চোখ দুটি রিপেয়ারের চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা ফেলে দিতে হয়েছে। ফলে চিরতরে চোখের দৃষ্টি হারালেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক অপারেশনের মাধ্যমে তার ক্ষতিগ্রস্ত চোখ অপসারণ করা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফরিদুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চোখ দুটি রিপেয়ারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।’
এর আগে, চাহিদামতো টাকা না পাওয়ায় খুলনার খালিশপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে শাহজালাল নামে এক ব্যক্তির দুই চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। গত ১৮ জুলাই রাতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শাহজালালের দাবি, তাকে শ্বশুরবাড়ির সামনে থেকে আটক করে থানায় নিয়ে টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা দিতে না পারায় খুলনার বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে তার দুই চোখ তুলে ফেলে পুলিশ।
তার স্বজনদের দাবি, শাহজালালকে তুলে থানায় নিয়ে মারধরের পর এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু চাহিদামতো টাকা না পাওয়ায় থানা থেকে নিয়ে গিয়ে খুলনা বিশ্বরোডে তার হাত-পা, মুখ বেঁধে দুই চোখ তুলে নিয়েছে পুলিশ। এরপর মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
তবে পুলিশের দাবি, ছিনতাই করে পালানোর সময় জনগণ শাহজালালকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এতে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে আহত অবস্থায় শাহজালালকে উদ্ধার করা হয়।
চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফরিদুল হাসান বলেন, ‘শাহজালালের দুটি চোখই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। আমরা এর আগে রিপেয়ার করেছিলাম। কিন্তু সেটা সফলভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না, ইনফেকশন হয়ে যাচ্ছে। এই চোখের ভিতরের অংশ রাখা হলে এই ইনফেকশন ছড়িয়ে যেতে পারে। মূলত এই কারণেই চোখের ভিতরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অপসারণ করা হয়েছে। ফলে আর কখনও দৃষ্টি ফিরে পাবে না সে।’
এদিকে ছেলে চোখের আলো চিরতরে হারিয়ে ফেলেছে জানার পর থেকে ভেঙে পড়েছেন শাহজালালের বাবা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে বাঁচিয়ে রেখে মেরে ফেলা হলো। আমি এর বিচার চাই। শাহজালাল কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ‘চোখ তুলে ফেলার অভিযোগে’ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পুলিশের বিরুদ্ধে চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ!
/আরজে/এমও/