শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোতালেব হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন ও লেকহেড স্কুলের পরিচালক খালেদ হাসান মতিনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকালে ৪টা ৫০ মিনিটে ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়ারুল ইসলাম উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা জুলফিকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুপুর তিনটায় আসামিদের আদালতে প্রেরণ করেন।
শিক্ষামন্ত্রীর বহিষ্কৃত ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোতালেব হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী গাজী শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘এই মামলটি সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে করা। মন্ত্রণালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মামলাটি করা হয়েছে। আসামিদের ৭২ ঘণ্টা বিনা বিচারে আটক রাখা আইনবিরোধী কাজ। এখানে আসামিদের মানবিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। আসামি মোতালেব হোসেনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই।’
নাসির উদ্দিনের আইনজীবী কিবরিয়া হসান শুনানিতে বলেন, ‘তার কাছে যে টাকা পাওয়া গেছে সেটি অফিসের পিকনিকের টাকা, তার কূপন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অবৈধ টাকা লেনদেনের কোনও অভিযোগ নেই।’
খালিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এহসানুল হক সমাজী। তিনি শুনানিতে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মামলাটি অতি দুর্বল। ফৌজদারি আইন অনুযায়ী মামলাটি চলার অযোগ্য। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী আসামি জামিন পাওয়ায় হকদার, মামলাটি জামিনযোগ্য ধারায়। মামলাটির তদন্তে ত্রুটি আছে।’ আসামি অসুস্থ, বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে বলেও জানান তিনি।
দুদকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই মামলাটি ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। মামলাটি মানি লন্ডারিং হতে পারে। তাই জামিনের বিরোধিতা করছি।’
প্রসঙ্গত, শিক্ষামন্ত্রী পিও মোতালেব হোসেন, মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ ও বিতরণ শাখার উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিন এবং লেকহেড গ্রামার স্কুলের পরিচালক খালেদ হাসান মতিনকে রবিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। গুলশান ও বছিলা এলাকা থেকে তাদের আটকের পর গতকাল ২২ তারিখ তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। লেকহেড স্কুলটি খুলে দিতে ওই স্কুলটির এমডির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন গত ১৬ ডিসেম্বর ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি গোপন চুক্তি করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় গোপন নথি লেকহেডকে দিয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা