বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরনো মদের বোতলে নকল মদ ঢুকিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ একজনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। আটক ব্যক্তির নাম মো. নাসিম (২৮)। মঙ্গলবার (১২ জুন) দুপুরে পুরান ঢাকার বংশাল থানার চাঁনখারপুল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি ঘর থেকে এক হাজারেরও বেশি বিদেশি মদের বোতল, নকল স্টিকার, বোতলের ছিপ, ছিপে ছাপ বসানোর ডাইস ও বোতলভর্তি নকল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক একেএম কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক জানান, আটক নাসিম পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার আড়ালে বিদেশি নকল মদ তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। তার আট দশজন প্রতিনিধির মাধ্যমে এই নকল মদ বিদেশি বলে ঢাকার বাইরে বিক্রি করে। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার বালিগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম আতাউর রহমান। নাসিমের সঙ্গে মো. আজিজ নামে পটুয়াখালীর আরও এক ব্যক্তি আছেন। তিনিও এই নকল মদ তৈরি করার সঙ্গে জড়িত।
জিজ্ঞাসাবাদকালে নাসিম জানিয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশি মদের বোতল তারা ২০/৩০ টাকা করে কেনে। এরপর সেগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে। বিদেশি বিভিন্ন নামি মদের ব্র্যান্ডের এসব কোম্পানির নাম সংবলিত স্টিকার তৈরি করে তা পুনরায় বোতলে লাগিয়ে দেয়। এরপর কর্কের ওপর ডাইস দিয়ে বিশেষ কায়দায় সিল দেয়। তারপর বোতলের ভেতরে কেমিক্যাল দিয়ে বানানো নকল মদ ভর্তি করে তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। নাসিম আরও জানায়, অনেকে তার কাছ থেকে কেবল বোতল কিনে নিয়ে যায়। তারা আবার নিজেরাই মদ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। একটি মদের বোতল পুনরায় স্টিকার, ছিপ ও ধুয়েমুছে বেশি দামে বিক্রি করে। তার ব্যবসায়িক পার্টনার আজিজ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানের সময় পালিয়ে গেছে। নাসিমের কাছ থেকে নিয়ে নিউমার্কেট এলাকার সাগর, সাভার এলাকার সুইট ও মোহাম্মদপুর এলাকার আলমগীর নকল এই বিদেশি মদ বাজারজাত করে। তবে তাদের কাউকে আটক করতে পারেনি অধিদফতর।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক একেএম কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নাসিম তিন বছর ধরে এই নকল মদের ব্যবসা করে। তার গোডাউনে বোতলভর্তি নকল মদ পাওয়া গেছে। তার আরও এক সহযোগী পালিয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূলত ঢাকা বাইরে এসব নকল মদ তারা গোপনে সরবরাহ করে। এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোগো সংবলিত শপিং ব্যাগ ব্যবহার করে।’