ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, বিজিবির মহাপরিচালক ও বিজিবি-৫০ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তনয় কুমার সাহা। একই সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবি-৫০ এর অপারেশন থেকে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর গুলিবর্ষণে তিনজন নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহতের ঘটনা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ওই অপারেশনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কেন যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
এছাড়া বিজিবির ওই অপারেশনে সংশ্লিষ্ট বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শনা দেওয়া হবে না রিট আবেদনে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। রিটে বলা হয়েছে, দেশের সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি। তাদের অর্পিত সেই দায়িত্ব রেখে সম্পূর্ণ বেইআইনিভাবে তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হন। এ সময় অন্তত আরও ২০ জন আহত হন। বিজিবির দাবি, নিহত ব্যক্তিরা গরু চোরাচালানকারী দলের সদস্য। তবে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার হরিপুর উপজেলায় যাদুরানী হাট বসে। হাটটি গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ। স্থানীয় বহরমপুর গ্রামের হবিবর রহমানসহ কয়েকজন গ্রামবাসী ওই হাটে বিক্রির জন্য গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় বিজিবির বেতনা ক্যাম্পের সদস্যরা গরুগুলো ভারত থেকে চোরাচালান করে আনা দাবি করে সেগুলো জব্দ করেন। এ নিয়ে বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীর বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় বিজিবি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।