পাঁচ দফা দাবিতে টানা ১৭তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা। দাবি আদায়ে শিগগিরই ‘আমরণ অনশন’ কর্মসূচি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। কবে থেকে নতুন কর্মসূচিতে যাবেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু না বললেও শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচির কথা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে ইতোমধ্যে দেশে ফিরেছেন। তিনি একটু অসুস্থ। শিগগিরই ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে চলমান সমস্যা সমাধানে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায়, কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা বলেন তারা।
মঙ্গলবার (১১ মে) সরেজমিনে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা যায়। আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া, যোগ্যদের কমিটিতে পদায়ন এবং মধুর ক্যানটিন ও টিএসসিতে পদবঞ্চিতদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ।
এদিকে, আজ প্রধানমন্ত্রীর কারা দিবসে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনও আলোচনা সভার আয়োজন না করায় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর তীব্র সমালোচনা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, মসজিদে মিলাদ ও দোয়া ছাড়া কোনও কর্মসূচির আয়োজন করা হয়নি। কিন্তু প্রতি বছর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এবার তা করা হয়নি।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে না নিলে আমরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাবো। শিগগিরই আমরা সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেবো।’ তবে, পাঁচ দফা দাবি আদায় হলে তারা চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
গত কমিটির উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা টানা ১৭ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আমাদের খবর নেয়নি। উল্টো আমাদেরকে তারা সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা যদি সিন্ডিকেটের হই, তাহলে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কার সিন্ডিকেটে রয়েছে। দাবি আদায় না হলে আমরা আমরণ অনশনে যাবো।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সমস্যা নিয়ে ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক শেখ হাসিনার সঙ্গে শিগগিরই সাক্ষাৎ করবো। আজ প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি দিবসে আমরা শুধু তার সঙ্গে দেখা করে এসেছি। ছাত্রলীগের চলমান সমস্যা নিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে, পরে আপার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে বসবো।’