নেতা বঙ্গবন্ধু কেমন ছিলেন, বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে তার সংগ্রামের পথগুলো কেমন ছিল, জানতে চাইলে এক পলকে সব উত্তর সামনে চলে আসে। হঠাৎই দেখবেন একপাশে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দৃপ্ত বাঙালি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলছেন, 'এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। সব মিলিয়ে একটা ছাউনির নিচে যেন বাংলার এই অবিস্মরণীয় নেতার জীবনকে এই প্রজন্মের চোখের সামনে মেলে ধরা হয়েছে। ছোট পরিসরে হলেও সে এক অন্যরকম আয়োজন।
এই প্রজন্মের যারা ইতিহাস পুরোটা হয়তো জানেন না, বঙ্গবন্ধুর জীবনের কিছু বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে চান বলে জানান আয়োজকরা। তারা বলছেন, মূলত কিশোরদের জন্য এই আয়োজনটি করা। তবে যে কোনও বয়সের মানুষই এখান থেকে জানতে পারবেন। এখানে রোজই বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেকে ঘুরতে আসেন। এক ফাঁকে তারা এই তাঁবুতে ঢুকে বঙ্গবন্ধুর জীবনযাত্রার সম্পর্কে জানতে পারবেন।
রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে চলছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ১৫০টির বেশি ছবি রয়েছে সেখানে। শুধু ছবিই নয়, রয়েছে ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী। মূলত মুজিববর্ষ উপলক্ষে ও নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে আরও পরিচিত করে তুলতেই এই আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
বুধবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা যায় সংসদ ভবনের সামনের ফুটপাতের এলাকায় হঠাৎই এক টুকরো বাংলাদেশ। সাদা তাঁবুর মধ্য দিয়ে ঢুকতেই ধারাবাহিকভাবে ইতিহাসের রাজ্যে প্রবেশ করবেন দর্শনার্থী। অনেকেই ভিড় করেছেন ভিডিওচিত্র প্রদর্শনীর কর্নারে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছবি প্রদর্শন করা হয় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে। তেমনই বক্তৃতা শুনছিলেন চা বিক্রেতা ১৬ বছরের রায়হান। ভিডিও দেখা শেষে বেরিয়ে আসার সময় তিনি বলেন, ‘এখনও কি দাপট!’
আয়োজকরা জানান, কেবল সন্ধ্যায় না, যখনই কোনও স্কুল বা কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে আসেন, তাদের জন্য তখনই প্রদর্শন করা হয় ভিডিও চিত্র। এছাড়াও প্রদর্শনী এলাকায় রয়েছে সেলফি কর্নার, মুজিব কোর্ট কেনা এবং মতামত প্রদানের সুযোগ।
প্রদর্শনীতে আসা মাহবুবা রহমান বলেন, ‘সন্ধ্যায় এখানে (মানিক মিয়া এভিনিউ) ঘুরতে এসে এমন একটি প্রদর্শনী দেখতে পারবো ভাবিনি। বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর অনেকগুলো ছবি দেখলাম। ছবি দেখে ভেতরে এখনও অনুভব হয়, তিনি আমাদের জীবনে মিশে আছেন।’
আয়োজন সম্পর্কে প্রদর্শনীটির সদস্য সচিব আহাদ হোসেন সোহাগ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যারা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে, তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। বঙ্গবন্ধুর জীবনের কিছু বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই বলেই এই আয়োজন।’
আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১৪ মার্চ রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।