দিন যত যাচ্ছে, করোনা আতঙ্ক তত বাড়ছে। করোনার মহামারি থেকে রক্ষা পেতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে রাজধানীর সবই এখন প্রায় বন্ধ। এই অবস্থায় খাদ্যের তীব্র সংকটে পড়েছেন রাজধানীর পথবাসী মানুষেরা। রাস্তার ধারে অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। এই অনাহারী মানুষের মুখে একটু খাবার তুলে দিয়ে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছে ‘সঙ্গে আছি’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর মার্চ থেকে পথবাসী মানুষের জন্য কাজ শুরু করে সংগঠনটি। গত ২৬ মার্চ থেকে তারা পথবাসীদের রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে শুরু করে। খাবার পেয়ে অনাহারীদের মুখের হাসিই সংগঠনের কর্মীদের অনুপ্রেরণার মূল শক্তি। তারা নিজেদের অর্থ দিয়েই এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতি রাতেই ছোট একটি পিকাপে করে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ২৫০ থেকে ৩০০ জন অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দেন সংগঠনটির সদস্যরা। খাবার রান্না করা হয় পুরান ঢাকার লালকুঠিতে, প্যাকেটও করা হয় সেখানে। তারপর সংগঠনের সদস্যরা সেই খাবার নিয়ে ছুটে চলেন ফুটপাথে ঘুমিয়ে থাকা অনাহারীদের কাছে। পুরো প্রক্রিয়াটিতে ৭-৮ জন সম্পৃক্ত থাকলেও মাঠে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন তিন জন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের এই কর্মযজ্ঞ।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সদস্য মাঈন উদ্দিন আরিফ বলেন, ‘অনাহারী মানুষগুলোকে খাবার তুলে দেওয়ায় একটা ভালো লাগা কাজ করে। তাদের খাবার দেওয়াতে আমাদের যে অনুভূতি হয়, সেটা বলে কখনও প্রকাশ করতে পারবো না। আমি বলতে চাই, সবাই যদি এগিয়ে আসেন, তাবে আমাদের সমাজের কোনও মানুষই না খেয়ে থাকবে না।'
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মধ্যবিত্তরা অনেক কিছুই পাচ্ছে। কিন্তু যারা রাস্তার ধারে শুয়ে থাকে, তাদের তো পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কারণ, চাল-ডাল নিয়ে তাদের রান্না করার জায়গাও নেই। যারা মূলত রাস্তার পাশে থাকে তারাও তো মানুষ, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মূলত তাদের খাবার দিতেই আমাদের এই আয়োজন। সবার দায়িত্ব তো নেওয়া সম্ভব না, তবে চোখের সামনে যতগুলো সম্ভব চেষ্টা করছি আমরা।'