X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৮ বৈশাখ ১৪৩১

মা দিবসেও ছেলের ভয়ে দরজা আটকে ঘরবন্দি থাকেন যে মা

আমানুর রহমান রনি
১০ মে ২০২০, ২২:১০আপডেট : ১১ মে ২০২০, ১২:২৯

মা রুনু ও ছেলে মিল্লাত

বিশ্ব মা দিবসেও এক মা তার ছেলের ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে ঘরবন্দি জীবনযাপন করছেন। বখে যাওয়া ছেলের মারধরে আহত ওই মা উপায় না পেয়ে কলাবাগান থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলাও করেছেন। তবে ছেলেকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

রাজধানীর কলাবাগান থানার গ্রিনরোড এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা মেয়ের নামে বরাদ্দ একটি সরকারি ডরমেটরিতে ছেলেকে নিয়ে থাকেন নুরুন্নাহার রুনু (৫১)। স্বামী কয়েকবছর আগে মারা গেছেন। মেয়ে লেখাপড়া শিখে ভালো চাকরি করলেও ছেলে মিল্লাত হোসেন (২৫) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। স্কুলে পড়ার সময় মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।  মাদকের টাকার জন্য মাকে মারধর ও ঘরে ভাঙচুর করতো সে। বর্তমানে তার এসব কাজ মাত্রা ছাড়িয়েছে।

৭ মে মধ্যরাতে মা নুরুন্নাহার রুনুকে মারধরের করে মিল্লাত। পরদিন দুপুরে কলাবাগান থানায় ছেলের নামে মামলা করেন মা।

মামলায় এজাহার বলা হয়েছে, মিল্লাত অষ্টম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ে লেখাপড়ে ছেড়ে দেয়। পাড়ার বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে মিশে মাদক সেবন শুরু করে। সে মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই ঘরে ভাঙচুর ও মা নারুন্নাহারকে মারধর করতো। তাকে ভালো করতে বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে। রিহ্যাবেও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে ভালো করা যায়নি।

মা নুরুন্নাহার  বলেন, '৭ মে মধ্যরাতে মাদক কেনার টাকার জন্য মিল্লাত প্রথমে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর কাঠের একটি লাঠি দিয়ে মারধর করলে আমি মাথা ও  কানে আঘাত পাই। ভবিষ্যতে মাদকের টাকা না পেলে সে আমাকে আবার জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গেছে।’

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৭/৮ বছর ধরে মিল্লাত খারাপ লাইনে চলে গেছে। ২০১৭ সালে ওর বাবা মারা যাওয়ার পর সে আরও বেশি খারাপ হয়েছে। আগে কেবল গালিগালাজ করতো। এখন প্রায়ই মারধর করে। আমি এতদিন হজম করেছি। কিন্তু ৭ মে রাতে আমার মনে হলো ও আমাকে খুন করে ফেলবে। দুই ঘণ্টা জিম্মি করে পেটাতে থাকে। বাথরুমেও যেতে দেয়নি। রাত পৌনে ১টার দিকে পাশের ফ্ল্যাটের লাইট বন্ধ করলে আমাকে বাথরুমে যেতে দেয়। এরপর আমি বাথরুম থেকে বের হয়ে দৌড়ে নিচে যাই। নিচ তলার ফ্ল্যাটে গিয়ে কলিং বেল দেই, তারা অনেকক্ষণ পর দরজা খোলে। আমি তাদের পা-হাত ধরে আশ্রয় চাই। এরপর তারা আমাকে আশ্রয় দেয় এবং পুলিশ ডাকে। পুলিশ এসে ওকে বাসা থেকে বের করে দেয়। কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখি এ আমার পেছনে।  আমি ভয়ে চিৎকার দিলে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন এসে ওকে বের করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, 'সেদিন রাতে দোয়া পড়েছি আর কান্না করেছি। আমি মৃত্যুর আগেই আজরাইল দেখেছি। ছেলে তার মাকে এভাবে মারতে পারে তা আমার বিশ্বাস হয় না। আমার কী অপরাধ। যতক্ষণ টাকা থাকে ততক্ষণ দেই। আমি এত টাকা কোথায় পাবো? পৃথিবীতে ছেলে ও মেয়ে ছাড়া কেউ নেই। সম্পত্তি নাই, টাকা নাই। কিন্তু আমার সেই ছেলেই আমাকে খুন করতে চায়!’

এ বিষয়ে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

 

/এআরআর/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!