X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল, দাবি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩০ জুলাই ২০২০, ০১:৩১আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২০, ০১:৩১

করোনায় সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল, দাবি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর করোনাকালে দীর্ঘ সাধারণ ছুটি, লকডাউন ও কাজ না থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আজ এক অনলাইন আলোচনায় তারা এ দাবি করেন। একইসঙ্গে সহজ শর্তে তাদের জন্য যেন ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় সেই দাবিও জানান তারা।
তৃতীয় লিঙ্গ, জেলে সম্প্রদায়,পান চাষি খাসিয়া সম্প্রদায়, হরিজন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা এই সেমিনারে কথা বলেন। তারা বলেন, এমনিতেই তারা সামাজিক নানা বৈষম্যের শিকার। করোনায় যখন কিনা মানুষ মানুষকে কাজে রাখছে না তখন তারা আরও অসহায় বোধ করছেন।
সরকারের দেওয়া ২৫শ টাকাও তাদের সবার কাছে পৌঁছায়নি দাবি করে সুস্থজীবন সংগঠনের প্রকল্প সমন্বয়ক পার্বতী হিজড়া বলেন, আমরা এখন জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করতে পারি না। আপনারা জানেন আমরা দোকান ও নতুন জন্ম নেওয়া শিশুদের নিয়ে গান-নাচ দিয়েই টাকা জোগাড় করি। এখন এমনভাবে রাস্তায় আমাদের দিকে তাকায় যেন আমরাই করোনা। তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের নেটওয়ার্ক আছে। সুস্থজীবনসহ আরও অনেকে সেখানে আছে। আমাদের নেটওয়ার্কে শুধু ধামরাইয়ের কয়েকজন ২৫০০টাকার প্রণোদনা পেয়েছে। এই নেটওয়ার্কের ৩১শ হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে কিছু হিজড়া খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। সেটা ৩০ শতাংশের বেশি হবে না। তার নিজের সংগঠনের হিসেব দিতে গিয়ে বলেছেন, সাড়ে ৫শ তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য আমাদের সংগঠনে। আমরা ৫০ জনের মতো ত্রাণ পেয়েছিলাম।

খাসিয়া সম্প্রদায় থেকে বাবলি তালাং বলেন, পান চাষ যেহেতু বাজারজাতের মূল্য স্থিতিশীল নয়। ফলে অর্থনীতি হুমকির মুখে । এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নাজুক অবস্থা, এসময়ে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা খুব জরুরি। সরকারি যে সহায়তা উপজেলা পরিষদ প্রশাসনের সামান্য বরাদ্দ পেয়েছি। আদিবাসীদের জন্য কিছু দেওয়া হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। তিনি বলেন, পান চাষ অর্থনীতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। সেহেতু চাষিদের জন্য বিশেষ অনুদান ও সহজ শর্তে ঋণের আবেদন চাই।
চট্টগ্রাম সিআরপি থেকে শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জড প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদের নিলুফার ইয়াসমিন যুক্ত হন। তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বৈষম্যের শিকার। সাহায্য নিতে লাইনে দাঁড়ালে শুনতে হয় আপনারা ভাতা পান, ত্রাণ দিয়ে কী হবে। ভাতার পরিমাণ মাত্র সাড়ে ৭শ টাকা, তাও পেতে হয় অনেক হিমশিম খেয়ে।
শরিয়তপুর জেলে সম্প্রদায়ের সুরুজ মিয়া বলেন, সারাবছর মাছ ধরি। নভেম্বর থেকে মে মাছধরা বন্ধ থাকে। সেসময় চার মন চাল পাই। কিন্তু সবসময় পুরোটা পাই না অভিযোগ করে তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা বাড়তি কিছু পেলাম না।
আলোচনায় যুক্ত হন হরিজন কলোনির নির্মল কান্তি দাস। তিনি বলেন, আমরা দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন একটি জনগোষ্ঠী যারা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করি। আমরা ভীষণ খারাপ আছি। কর্তৃপক্ষ মাস্ক-গ্লাভস সরবরাহ করেনি। চিকিৎসকদের আপনারা নানা প্রণোদনা দিচ্ছেন, আমরাও তো রোগীর আবর্জনা পরিষ্কার করছি, আমার জন্য সরকারের কী ব্যবস্থা?
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এই নিগৃহীত গোষ্ঠীকে প্রাথমিক স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারে সাহায্যের ২৫শ টাকার কেউ কেউ পেয়েছেন। মন্ত্রী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রত্যেক প্রতিনিধির দাবিগুলো ধরে ধরে জবাব দেন। পান চাষিরা কৃষি ব্যাংকের ঋণ কেন পাবেন না সে বিষয়ে যোগাযোগের আশ্বাসও দেন তিনি।
দেশের অধিকারকর্মী, অর্থনীতিবিদ, নারীনেত্রী, গবেষকসহ অনেকে আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রধান শাহীন আনাম।

/ইউআই/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!