ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় (ডিএনসিসি) অনেকেই ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এখানে ব্যবসা করছে। কীভাবে তারা এ কাজটি করে? এরকম অনেক আছে। আমি বলতে চাই, আপনারা যারা এখানে ব্যবসা করছেন গুলশানে, উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। মোহাম্মদপুরের লাইসেন্স নিয়ে গুলশানে ব্যবসা করা যাবে না। আবার লাইসেন্সে গুলশানের ঠিকানা দেওয়া থাকলে গুলশানেই ব্যবসা করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর গুলশান এলাকায় পরিচালিত উচ্ছেদ কাজ পরিদর্শনকালে মেয়র এসব কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, এটা গুলশান এক নম্বর। গত পরশুদিন ছিলাম গুলশান ২ নম্বরে। এখানে সবাই ব্যবসা করছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাল্টিন্যাশনাল করপোরেশন, সবাই ব্যবসা করছে। যাকেই জিজ্ঞাসা করি, সে বলে আমরা জানি না। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্সের মধ্যেই পরিষ্কার করে এসব বিষয়ে লেখা আছে। আপনার সাইনবোর্ডের মাপ কত, আপনার ট্যাক্স কত, সবকিছু পরিষ্কারভাবে লেখা আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্য আমাদের। আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে। ফুটপাত ও রাস্তায় অবৈধভাবে রাখা নির্মাণসামগ্রীর নিলামও অব্যাহত থাকবে। আসুন, একটি সুন্দর ঢাকা শহর গড়ি।’ পর্যায়ক্রমে ডিএনসিসির অন্যান্য জায়গায়ও এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে বলে তিনি জানান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তিন জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পরিচালনায় বৃহস্পতিবার গুলশান, বনানী ও প্রগতি সরণিতে আরও প্রায় সাত শতাধিক অবৈধ সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া স্পট নিলামের মাধ্যমে এসব সাইনবোর্ড ও অন্যান্য মালামাল এক লাখ ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করা, ট্রেড লাইসেন্স না থাকা, সরকারি কাজে বাধা প্রদান করা এবং অন্যান্য অপরাধে এক লাখ ৯১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মেয়র বলেন, ‘আমি বলতে চাই, এই ধরনের যত্রতত্রভাবে যারা বড় বড় সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যবসা করছেন, কিন্তু সিটি করপোরেশনের পাওনা ট্যাক্স তারা দিচ্ছেন না। এধরনের বিলবোর্ড একশ’ ভাগ অবৈধ। আমরা এ বিলবোর্ডের পারমিশন দেই নাই। যারা এধরনের বিলবোর্ড লাগাচ্ছেন, তাদেরকে সাবধান করে বলছি এগুলো অবৈধ। এগুলোকে কোনো মতেই আমরা পারমিশন দেবো না। তাই আমি বলেছি, এগুলোকে সব উচ্ছেদ করতে, অপসারণ করতে। এখান থেকে প্রাপ্ত মালামালগুলো স্পট নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে দিতে বলেছি। আমরা মানুষকে দেখাতে চাই, যারা বিলবোর্ড সাইনবোর্ড লাগাবেন, তারা আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশনকে ট্যাক্স দিয়ে তারপর লাগাবেন।’
অভিযানে গুলশান এক নম্বর গোলচত্বরে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক অবৈধ সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ও ব্যানার উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ করা সামগ্রী এক লাখ ৫২ হাজার টাকায় বিক্রয় করা হয়। এসময় যথাযথভাবে সাইনবোর্ড স্থাপন না করায় এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় শান্তা গ্রুপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বনানী ১১ নম্বর সড়কে অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় দুই শতাধিক সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং অন্যান্য অপরাধে মোট এক লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া প্রগতি সরণিতে অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের পরিচালনায় উচ্ছেদ অভিযানে দুই শতাধিক সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকৃত এসব সাইনবোর্ড নিলামে ২৫ হাজার টাকা বিক্রয় করা হয়। এছাড়া ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করা এবং ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
