দুর্নীতির মামলার রায় শুনতে আদালতের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি গুলশানের বাসা থেকে রওনা হন। রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
আদালতে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৩০টির বেশি গাড়ি আছে। তবে খালেদার নিরাপত্তায় সিএসএফ (চেয়ারপারসন’স সিকিউরিটি ফোর্স) এর কেউ নেই। ইউনিফর্মধারী সদস্যরা ছাড়াও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত আছেন। গাড়িবহর সাতরাস্তা পর্যন্ত আসার পর ছাত্রদল, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল করে এসে বহরের সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে পুলিশ এসময় তাদের কোনও ধরনের বাধা দেয়নি।
গাড়ি বহর মগবাজার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে বিএনপির কর্মীদের মধ্য থেকে সহিংসতা তৈরির চেষ্টা করতে দেখা যায়। মগবাজারে ছাত্রদলের কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে থাকা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, মগবাজার মোড়ে তাদের লক্ষ্য করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এসময় সেখানে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনও ব্যবস্থা নেননি।
খালেদা জিয়ার এই রায় উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। বকশীবাজারে বিশেষ আদালত ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা আছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা কুয়েত থেকে এতিমদের জন্য পাঠানো দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করে দুদক। ওই বছরই ৪ জুলাই মামলাটি গ্রহণ করেন আদালত। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্যসচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলার ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়া জামিনে রয়েছেন। মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে আর তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান পলাতক।