X
রবিবার, ১২ মে ২০২৪
২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সততাই হবে আ.লীগের সহযোগী সংগঠনে নেতা নির্বাচনের প্রধান নির্ণায়ক

মাহবুব হাসান
২৫ অক্টোবর ২০১৯, ২২:১৮আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ২২:২১

সততাই হবে আ.লীগের সহযোগী সংগঠনে নেতা নির্বাচনের প্রধান নির্ণায়ক সততাকে প্রাধান্য দিয়ে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি দলের জন্য অবদান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা এবং সাংগঠনিক ক্ষমতাও হবে শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাইয়ের নির্ণায়ক।

আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী, একটি ভ্রাতৃপ্রতীম এবং একটি সমমনা সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী নভেম্বরে। এসব সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অন্যান্য ক্ষেত্রে লেনদেন, কার কত সম্পদ আছে, আয়ের উৎস, কেউ কোনও লাভজনক পদে ছিলেন কিংবা আছেন কিনা, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রার্থীর সাংগঠনিক পরিচয় ও দলের দুঃসময়ে ভূমিকা, তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক অবস্থানের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি শিক্ষাজীবনে কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়েছেন, ছাত্রজীবনে তার সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ চলছে। এছাড়া, নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিও নেতৃত্ব নির্ধারণে আমলে নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার দল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। যেন কোনোভাবেই দুর্নীতি বা অন্য কোনও ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে না পারে। পাশাপাশি সম্মেলন ও নতুন কমিটির মাধ্যমে যেন কোনও অনুপ্রবেশ না ঘটে— সেটাও নজরদারিতে রাখা হবে।’

প্রসঙ্গত, আগামী ছয় নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন। নয় নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন শ্রমিক লীগের সম্মেলন। এরপর ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আর সমমনা সংগঠন মৎসজীবী লীগের সম্মেলন  হবে আগামী ২৯ নভেম্বর। সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিটি সংগঠনেই নতুন কমিটি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন কমিটিতে সভাপত ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে বেশ আগে থেকেই প্রতিটি সংগঠনের এক ঝাঁক নেতা তৎপরতা শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব সংগঠনের সাংগঠনিক নেতা। রীতি অনুযায়ী তার (শেখ হাসিনা) মতামত নিয়ে সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করে থাকেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই। সাধারণত, শেখ হাসিনার মতামত নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় নেতা, সংশ্লিষ্ট সংগঠনের শীর্ষ নেতারা মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা সিদ্ধান্ত দেন। যদি এসব সংগঠনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনও নেতার অতীত সংশ্লিষ্টতা থাকে— তবে তার মতামতও নেওয়া হয়। যেমন শ্রমিক লীগ করে আসা কেউ কেন্দ্রীয় নেতা হলে শ্রমিক লীগের কমিটি গঠনের সময় তার মতামত নেওয়া হয়। একই  রীতি যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ অন্যান্য সংগঠনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে, নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হলে এ রীতির প্রয়োজন হয় না।

উল্লেখ্য, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোতে আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। অতীতের সংশ্লিষ্টতা ও কেন্দ্রীয় পদের দায়িত্বের কারণে আওয়ামী লীগ নেতারা এসব সংগঠনের বেলায় মতামত দিয়ে থাকেন। দলটির বেশির ভাগ নেতা ছাত্রলীগ থেকে আসায় ছাত্রলীগের সম্মেলন আসলেই তারা এ নিয়ে সরব হয়ে থাকেন। তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হককে ছাত্রলীগ দেখভালের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব দেওয়া আছে। আবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং জাহাঙ্গীর কবির নানক যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান হওয়ায় তারা যুবলীগের সম্মেলন নিয়ে মতামত দিয়ে আসছিলেন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কৃষিবিদ হওয়ায় এবং ফরিদুন্নাহার লাইলী দলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় কৃষক লীগের ক্ষেত্রে তারা মতামত দিয়ে থাকেন। একইভাবে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেতা হওয়ায় এ সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনে তার মতামত গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক ও শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ শ্রমিক লীগে, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকাইয়া সুলতানা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের বিষয়ে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এবং কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী মহিলা লীগের সাবেক নেতা হওয়ায় এ সংগঠনের ক্ষেত্রে তাদের মতামত নেওয়া হয়।

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব: শেষ আসরে গাইলেন মন্ত্রীও!
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব: শেষ আসরে গাইলেন মন্ত্রীও!
মুম্বাইকে হারিয়ে সবার আগে প্লে অফে কলকাতা
মুম্বাইকে হারিয়ে সবার আগে প্লে অফে কলকাতা
গ্রানাদাকে উড়িয়ে দিলো চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
গ্রানাদাকে উড়িয়ে দিলো চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে: পরিবেশমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
ফলন বেশি, চরাঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকছেন ‘জাপানি মিষ্টি আলু’ চাষে
ফলন বেশি, চরাঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকছেন ‘জাপানি মিষ্টি আলু’ চাষে
মান ভাঙলো মিমির, এলো ‘তুফান’র দ্বৈত ঝলক
মান ভাঙলো মিমির, এলো ‘তুফান’র দ্বৈত ঝলক
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করলো আমিরাত
নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করলো আমিরাত
‘কর্তৃপক্ষের’ আদেশের দায় কার?
‘কর্তৃপক্ষের’ আদেশের দায় কার?