বঙ্গবন্ধুর তুলনা শুধু বঙ্গবন্ধুই হতে পারেন, অন্য কেউ না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, একাধারে সমাজের, দেশের, বাঙালি এবং বিশ্বের বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু। সমুদ্রের গভীরতা মাপা যাবে, কিন্তু জনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার পরিমাণ মাপা যাবে না। তার মতো বিচক্ষণ নেতা শুধু দেশে নয়, বিশ্বে বিরল।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধর বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রাপ্তির শ্রদ্ধা, ভালোবাসার অমলিন স্মতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন নেতা। তার আপসহীনতার কারণে তাকে বার বার হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আবার তিনি যখন কথা বলতেন ভেবে-চিন্তা করে কথা বলতেন, এক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। তিনি যেটা বলেছেন সেটার ওপরই অনড় থেকেছেন। যুগে যুগে অনেক নেতা এসেছেন, তবে তার মতো এত বিচক্ষণ নেতা বিশ্বে বিরল। তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এরপর দলকে সংগঠিত করেছেন, পরে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন— তারপর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি যখন বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়, সেদিন আমি উনাকে ‘তুমি’ সম্বোধন করেছিলাম। সার্জেন্ট জহুরুল, অধ্যাপক শামসুজ্জোহা, আসাদ, রুস্তমের রক্তের বিনিময়ে তোমাকে মুক্ত করেছি। বলেছিলাম, আমরা তোমার কারণে ধন্য, তোমার কাছে ঋণী। আজ তোমাকে একটি উপাধি দিয়ে কিছুটা ঋণ থেকে মুক্ত হতে চাই।’’
অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের প্রজন্ম এবং আমাদের পরবর্তী যত প্রজন্ম আছে, সবাইকে ফিরে যেতে হবে ৪৮ থেকে ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত। ফিরে যেতে হবে ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৬৬ সালের ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তরের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের কাছে এবং ফিরে যেতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে।’
স্পিকার বলেন, ‘যিনি সারাজীবনকে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা সংগ্রামে ব্যয় করেছেন— এমন একজন মহান নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন মামলা-হামলা সব কিছু উপেক্ষা করে তিনি অবিচল থেকেছেন তার লক্ষ্যে। তিনি অন্যায়ের সঙ্গে কখনও আপস করেননি। তার জীবনের মূল দর্শন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। সেটার উদ্ধৃতি ও পরিচয় তার ভাষণে আমরা খুঁজে পাই।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট তারানা হালিমসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা।