X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এবার তারা বিদেশ থেকে কলকাঠি নাড়ছে, বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৮আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৮

বিএনপি-জামাতের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের ম্যান্ডেট পাবে না বুঝতে পেরে আগে থেকে এবার তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস, যানবাহন পোড়ানো, বোমাবাজি, নাশকতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তারা ঘরবন্দী করতে চায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার ওপর এবার তারা বিদেশ থেকেও কলকাঠি নাড়ছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন এলেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং উন্নয়নবিরোধী একটি চক্র ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্বাচনে কূটকৌশল অবলম্বন বা কারচুপির মাধ্যমে কিংবা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে তারা আটঘাট বেঁধে মাঠে নামে। সফল না হলে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিশোধস্পৃহায়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, হরতাল-অবরোধের নামে যানবাহন পোড়ানো, মানুষ হত্যা, রেললাইন উপড়ে ফেলাসহ বিভিন্ন নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। মা ও শিশুর অগ্নিদগ্ধ লাশ সবার বিবেককে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিয়েছে। এ ধরনের হীন কাজ আর সহ্য করা যায় না।

তিনি বলেন, জনগণের সাড়া না পেয়ে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে এসব নাশকতা চালিয়ে জানমালের ক্ষতি করছে। সন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করার স্বপ্ন-সাধ কোনও দিনই তাদের পূরণ হতে দেবে না এ দেশের জনগণ।

সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৬ সময়ে যেমন আপনারা ওদের প্রতিহত করেছিলেন; আসুন, এবারও সম্মিলিতভাবে ওদের প্রতিহত করি। স্বাধীনতাবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী এই শকুনের দল আর কোনও দিন যাতে বিষময় দন্ত-নখর বসিয়ে বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করতে না পারে, এই বিজয়ের মাসে এ শপথ নিই।

দায়িত্ব পালেন সরকার শতভাগ সফল, এমন দাবি না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে সব সময়ই যে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, এমন দাবি করবো না। তবে আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি তা বাস্তবায়ন করি। বিগত তিনটি নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন তার প্রমাণ। তবে মাঝেমধ্যে মনুষ্য-সৃষ্ট, প্রাকৃতিক ও বৈশ্বিক বাধাবিপত্তি আমাদের চলার গতিপথকে মন্থর করেছে। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বিস্তারের চেষ্টা মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়েছে। ২০০৯ সালের পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করতে হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির ধকল কাটতে না কাটতেই প্রথমে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এ বছর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ভয়াবহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অবরোধ-পাল্টা অবরোধের ফলে গোটা বিশ্বের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা হয়েছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অধিক মূল্যে পণ্য ক্রয় ও আমদানি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। দেশীয় মুদ্রার মানের ব্যাপক অবনতিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্য ও মানুষের জীবনযাপনের ওপর। বহুমুখী ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অনেক সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি রোধ করতে পারিনি। এ সমস্যা শুধু আমাদের দেশের নয়, এ সমস্যা ধনী-গরিব সব দেশের।

তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা সম্প্রসারণসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্দশা লাঘবের। আশা করি, খুব শিগগিরই আমরা এই অভিঘাত কাটিয়ে উঠতে পারবো।

তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরের সরকার পরিচালনার পথপরিক্রমায় যা কিছু ভুলত্রুটি, তার দায়ভার আমাদের। সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের। আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কথা দিচ্ছি, অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সবাইকে হারিয়ে রাজনীতিতে এসেছি শুধু এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। এ কাজ করতে গিয়ে আমাকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে বারবার। কিন্তু আমি পিছপা হইনি। যতদিন আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন, সুস্থ রাখেন, তত দিন যা কর্তব্য হিসেবে আমি গ্রহণ করেছি, সেখান থেকে সরে আসবো না। আপনাদের সেবক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়েই আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।

স্বল্পোন্নত দেশের উত্তরণকে একই সঙ্গে সম্মানের ও চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে এই চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে বিশাল মোকাবিলা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট 'সোনার বাংলা' প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আসুন, আরও একবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধি দেবো।

আরও পড়ুন:

জয়ী হলে নতুন বেতনকাঠামো দেবে আ.লীগ

ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের প্রতিশ্রুতি আ.লীগের

‘ভুলের দায় আমার, সাফল্য আপনাদের’

দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা

আ.লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করছেন শেখ হাসিনা

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানে আ.লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুষ্ঠান শুরু

/ইএইচএস/এনএআর/
সম্পর্কিত
বেসিস নির্বাচন: দেশের সফটওয়্যার খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চান ইকবাল আহমেদ
হামাসের ২৫টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দাবি ইসরায়েলের
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে গ্রেফতার ২০
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
তীব্র তাপদাহে মেয়েদের স্বস্তির সংবাদ দিলেন সালাউদ্দিন
তীব্র তাপদাহে মেয়েদের স্বস্তির সংবাদ দিলেন সালাউদ্দিন
বেসিস নির্বাচন: দেশের সফটওয়্যার খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চান ইকবাল আহমেদ
বেসিস নির্বাচন: দেশের সফটওয়্যার খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চান ইকবাল আহমেদ
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই