বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মোস্তফা মোহসীন মন্টু আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। গণফোরামের সভাপতি হিসেবেই তার পরিচয় নয়। তার মূল পরিচয় হচ্ছে— তিনি একজন সত্যিকার অর্থেই একজন মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা। পুরো সত্তরের দশকজুড়ে তিনি স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছেন। পরবর্তীকালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন। প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধ করেছেন। পরবর্তীকালে নীতির সঙ্গে মিল না হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তারপর আর কোনও কমেস্প্রামাইজ করেননি। এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার নীতির প্রশ্নে কোনও আপস করেননি।
সোমবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় স্কয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি মোস্তফা মহসীন মন্টুর মরদেহ দেখেন। তার সঙ্গে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ছিলেনন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মোস্তফা মহসীন ছিলেন গণতন্ত্রের অটল বিশ্বাসী একজন মানুষ। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক নেতা। আমরা সত্যিকার অর্থেই একজন বিশিষ্ট দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাকে হারালাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে হারিয়েছি— আমার একজন অত্যন্ত শরিককে, আমার ঘনিষ্ট বন্ধুকে। তার চলে যাওয়ায় জাতির যে ক্ষতি হয়েছে, এই ক্ষতি সহজে পূরণ হওয়ার নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার রাজনীতিতে এ ধরনের মানুষের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তার চলে যাওয়া আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত দুঃখের ও কষ্টের। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে দোয়া চাইছি— আল্লাহ যাতে নসিব করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের এই শোক সহ্য করার তিনি শক্তি দান করেন। বর্তমানে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের তাকে অনুসরণ করা উচিত।’
হাসপাতালে বিএনপির মহাসচিব মন্টুর দুই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। মন্টুর ছোট মেয়েকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাবাকে ধরে রাখতে পারলে না।’ এ সময় ফখরুল ছিলেন অশ্রুসজল।
বিএনপি মহাসচিব হাসপাতালে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপে জানান, ঢাকা কলেজে ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখেন। আইয়ুবখানবিরোধী আন্দোলনে তারা একসঙ্গে যুক্ত থাকার কথা জানান। ফখরুল বলেন, ‘আমরা সেই ছাত্রজীবন থেকে একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। লড়াই করেছি।’
মির্জা ফখরুল জানান, শহীদ মিনারে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। তিনি নিজেও থাকবেন সেখানে। হাসপাতালে মির্জা ফখরুল পৌনে ৭টায় আসেন। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে মন্টুর মরদেহ তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৯টায় মোস্তফা মহসীন মন্টুর জানাজায় যোগ কথা রয়েছে মির্জা ফখরুলের।
গণফোরাম সভাপতির মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে আসেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সিনিয়র নেতা সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। হাসপাতালে গণফোরামের অন্য নেতারাও আসেন।