দেশজুড়ে চলমান হত্যাকাণ্ড নিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখে মৃদু হাসি ফুটে ওঠে, সেই হাসি কি হায়েনার হাসি নয়, এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যর প্রতিক্রিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বেই বাংলাদেশে বৃষ্টিধারার জায়গা নিয়েছে রক্তধারা। গোটা জাতিকে জিম্মি করতে গিয়ে শেখ হাসিনা সহিংস সন্ত্রাস কাঠামো নির্মাণ করেছেন। এখন ক্ষমতাসীন রাঘব-বোয়ালরা গোটা দেশটাকে গিলে খাচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু অবৈধ, সেইজন্য তিনি জনগণকে শত্রু ভাবেন। আর সে কারণেই শত্রু নিধনে (সাধারণ নিরীহ জনগণ) তিনি সবচাইতে পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন- হত্যা, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মাদারীপুরে শিক্ষককে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার জঙ্গি ফাইজুল্লাহ ফাহিম পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার জন্য খালেদা জিয়া কেন এতো মায়াকান্না করছেন? এ থেকেই বোঝা যায় গুপ্তহত্যার সঙ্গে তাদের একটা সম্পর্ক রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘ফাহিম একজন অভিযুক্ত আসামি। রিমান্ডে সে অস্ত্র পেল কোথায়, আর যুদ্ধ করলো কিভাবে? সেখানে তাকে কেন ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হলো? একজন লোককে বিনা বিচারে হত্যা করা হলে জনগণের নেত্রী কথা বলবেন না? খালেদা জিয়া তাই প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি জনগণের মনের আওয়াজের প্রতিধ্বনিই করেছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই সারাদেশে তারা গডফাদার তৈরি করে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় গডফাদার তৈরি হয়েছে। এরা অধিকাংশই এখন ভোটারবিহীন সরকারের মন্ত্রী-এমপি। শাসকদলের এমপিদের হাতে গুলিবিদ্ধ হচ্ছে শিশুরাও, এদের হাতে মায়ের পেটের শিশুরাও নিরাপদ থাকতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনি যে কর্মকাণ্ডই করুন না কেন মানুষ সেটি বিশ্বাস করে না। দেশের যে কোনও হত্যাকাণ্ডে আপনার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যে বিজ্ঞপ্তি দেয়, সেটিও মানুষ বিশ্বাস করে না। কারণ জনগণ মনে করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী বিবৃতি দেয়।’
সরকার জঙ্গি দমনের নামে জনগণের ওপর বেপরোয়া ক্র্যাকডাউন চালিয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে যে নামে রামকৃষ্ণ মিশনের ধর্মগুরুকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল, সেই এবি সিদ্দিকীর নাম ব্যবহার করেই এবার বৌদ্ধ মহাবিহারের প্রধানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৌদ্ধ মহাবিহারের প্রধানকে যথাযথ নিরাপত্তা বিধানের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
/এসটিএস/এমও/এজে
