ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনই সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না দলটির নেতারা। ফলে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বর্তমান সংসদের শূন্য হওয়া ৫টি আসনের উপনির্বাচন নিয়ে আলোচনা হলেও অংশগ্রহণ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপনির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটির নেতাদের একটি অংশ উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মত দিলেও আরেকটি অংশ এর বিরোধিতা করেছেন। ফলে উপনির্বাচন প্রার্থী দেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, দুই সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে এই সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সবাই একমত। কেউ মনে করেন নির্বাচনে যাওয়া মানেই টাকা নষ্ট এবং নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া। তাই স্থায়ী কমিটির অনেকে বলেছেন বিএনপির পক্ষে আর কোনও নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠিক হবে না।
এই নেতা আরও বলেন, ভিন্নমতও এসেছে। স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা মনে করেন বিএনপি বিপ্লবী পার্টি নয়। ফলে গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। কারণ গণতন্ত্রে ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। নেতাদের দুই রকম মতামতের কারণে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সংসদের ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪, বগুড়া-১, গাইবান্ধা-৩ ও যশোর-৬ আসন খালি রয়েছে। এসব আসনে উপনির্বাচন হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে আরেকটি এজেন্ডা ছিল সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচন। বৈঠকে ঢাকা সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভোটকেন্দ্র দখল, ভোটের গোপন কক্ষে তাদের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, বরাবরের মতো ভোটকেন্দ্র বিএনপির এজেন্ট নিশ্চিত করতে না পারার বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। নির্বাচনি মাঠে নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতি ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রমাণ বলেও মতামত এসেছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির দুই নেতা বলেন, সিটি নির্বাচনের দিন ঢাকা মহানগরের অনেক নেতাই ভোট দিতে যায়নি। অনেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। আগামীতে মহানগর কমিটি গঠনে এসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।