X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এপিঠ-ওপিঠ

মুক্তি মিলবে দক্ষিণ আফ্রিকার?

খালিদ রাজ
২৭ মে ২০১৭, ১৮:৫৪আপডেট : ২৭ মে ২০১৭, ১৮:৫৪

দরজায় কড়া নাড়ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ১ জুন থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে শুরু হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। ৮ দেশের এই উত্তেজনাকর লড়াইয়ের আগে কোন দলের কী অবস্থা, শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে থাকছে কে, কেনই বা ফেভারিট ধরা হচ্ছে তাদের- এই নিয়েই আমাদের বিশেষ আয়োজন। আজ থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে-

দক্ষিণ আফ্রিকা দিন যায়, মহাকালের ক্যালেন্ডারে যোগ হয় নতুন বছর, বদলায় না শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্য। সময়ের মারপ্যাচে ‘চোকার্স’ অপবাদটা যেন ধরে আরও আষ্টেপৃষ্ঠে। গোটা সময়টা শ্রেষ্ঠত্বের পতাকা উড়িয়ে অংশ নেবে ক্রিকেটের বড় কোনও টুর্নামেন্টে, আর ফিরবে লজ্জার নতুন কালিমা গায়ে মেখে- দৃশ্যটা যেন রুটিন বানিয়ে ফেলেছে প্রোটিয়ারা। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ- ক্রিকেট বিশ্ব শুনে গেছে একই বেসুরো গান। বুকের ওপর চড়ে বসা ইতিহাসের থাবা থেকে এবার কি মুক্তি মিলবে তাদের?

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে এই প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বের অলিগলিতে। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যাওয়া একটা দলের আসল মঞ্চে এসে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ার দৃশ্যে হয়তো কেঁদে উঠে ২২ গজের খেলাটাও। এবারের কথাটাই ধরুন না। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের টুর্নামেন্টেও গেছে তারা ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ের চূড়ার বসে। তবু শিরোপা জিততে পারবে কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট করে দিতে পারছেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। ‘চোকার্স’ অপবাদ যে কিছুতেই ঘোচাতে পারছে না এবি ডি ভিলিয়ার্সরা।

আরও একটি সুযোগ এসেছে এই অপবাদ থেকে মুক্তির। দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে কিন্তু ইংল্যান্ডে গিয়েছে অতীত ইতিহাস বদলাতে। অনুপ্রেরণা বলতে ১৯৯৮ সালের আইসিসি নকআউট ট্রফি। এখনকার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম আসরের শিরোপা জিতেছিল যে তারাই। ক্রিকেটে সাফল্য বলতে ওটাই তাদের সবেধন নীলমণি। বাংলাদেশের ওই আসরে তিনটি ম্যাচ জিতেই শিরোপা উদযাপন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দীর্ঘ ১৯ বছর পর ক্রিকেট আলোয় দেশকে ভরিয়ে দিতে পারবেন না ডি ভিলিয়ার্সরা?

স্বপ্নপূরণ করতে অবশ্য গ্রুপ পর্বেই দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। ‘বি’ গ্রুপে পেরোতে হবে তাদের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বাধা। আছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো কঠিন প্রতিপক্ষ।

কেন্দ্রবিন্দু : গ্রুপ পর্বে দাপুটে সব জয়ে নকআউট পর্বে নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এই রাউন্ডে এসেই এলোমেলো হয়ে যায় সব। উত্তেজনার পর্যয়টা আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না তারা। পূর্বসূরিদের দিয়ে যাওয়া ‘চোকার্স’ অপবাদটা আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে তাদেরকেও। ২০১৫ বিশ্বকাপে খানিকটা জট ছাড়িয়েছিল প্রথমবার নকআউট পর্বে জিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ জিতে নতুন দিনের গান শোনালেও ডি ভিলিয়ার্সদের আত্মবিশ্বাসের বেলুন ফুটো হয়ে যেতে সময় নেয়নি। সময় এসেছে আবার উঠে দাঁড়ানোর। আর এ জন্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পেয়েছে ভারসাম্যপূর্ণ এক দল। ব্যাটসম্যান হিসেবে যেমন আছেন ডি ভিলিয়ার্স, ফাফ দু প্লেসিস, হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক, জেপি দুমিনি ও ডেভিড মিলারের মতো ব্যাটসম্যান; তেমনি আলো ছড়ানোর অপেক্ষায় রয়েছেন কাগিসো রাবাদা, মরনে মরকেল, ওয়েইন পারনেল, ইমরান তাহিরের মতো পরীক্ষিত বোলাররা। বল-ব্যাট দুটোতেই অবদান রাখতে পারেন ক্রিস মরিস ও ফারহান বেহারদিন।

শক্তি : ২০১৫ বিশ্বকাপের টানা দুই ম্যাচে ৪০০-এর উপরে রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের টুর্নামেন্টের ওই ব্যাটসম্যানরা আছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। রান বন্যায় তাই এই টুর্নামেন্টও ভাসাতে পারেন ডি ভিলিয়ার্স-দু প্লেসিসরা। ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট্ হাসলে প্রতিপক্ষদের কী অবস্থা হয়, সেটা ক্রিকেটের কম বেশি খবর যারা রাখেন, তারা বেশ ভালোই জানেন। তাছাড়া ওপেনিংয়ে ডি কক ও আমলার জুটি ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা। মিডল অর্ডারে দুমিনি-মিলারও হয়ে উঠতে পারেন প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর।

দুর্বলতা : বিশ্বসেরা সব ব্যাটসম্যান আছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এই দলে। তবে টপ অর্ডার ভেঙে পড়লে দলকে ধরে রাখার মতো ব্যাটসম্যানের অভাবটা অনেক দিন থেকেই টের পাচ্ছে তারা। মিডল অর্ডার নিয়েই তাই তাদের বেশি দুশ্চিন্তা থাকবে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ডি ভিলিয়ার্স অনেকটা নিচে নেমে খেলেছিলেন, এবার উপরের দিকে উঠে গেলে চাপ বাড়তে পারে প্রোটিয়াদের। হ্যাঁ, দুমিনি ও মিলারের মতো ব্যাটসম্যানরা আছেন, তবে তারা ঠিক ধারাবাহিক নন।

এবি ডি ভিলিয়ার্স নজরে থাকবেন : ডি ভিলিয়ার্সের দিকে নজর থাকাটাই স্বাভাবিক। অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির টুর্নামেন্টে প্রোটিয়াদের হতাশার দিন শেষ করার মিশনে তিনি কেমন করেন, আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে তা। দীর্ঘদিনের চোট কাটিয়ে এ বছরের শুরুর দিকে মাঠে ফিরে আছেন তিনি চেনা ছন্দে। যদিও সেঞ্চুরি পাননি একটিও। তার সঙ্গে নজরে থাকবেন পেসার রাবাদা। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে অভিষেক হওয়া এই পেসার প্রথমবার নামতে যাচ্ছে ক্রিকেটের বড় মঞ্চে।

স্কোয়াড : এবি ডি ভিলিয়ার্স (অধিনায়ক), হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক, ফাফ দু প্লেসিস, জেপি দুমিনি, ডেভিড মিলার, ক্রিস মরিস, ওয়েইন পারনেল, আন্দিলে ফেহলুকাও, কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহির, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, কেশব মহারাজ, ফারহান বেহারদিন, মরনে মরকেল।

সেরা প্রাপ্তি : চ্যাম্পিয়ন-১৯৯৮ (আইসিসি নকআউট ট্রফি)।

প্রতিপক্ষ : শ্রীলঙ্কা (৩ জুন), পাকিস্তান (৭ জুন), ভারত (১১ জুন)।

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
গাছশূন্য ২০ কিলোমিটার সড়ক, তাপপ্রবাহে পথচারীদের দুর্ভোগ
গাছশূন্য ২০ কিলোমিটার সড়ক, তাপপ্রবাহে পথচারীদের দুর্ভোগ
প্রথমবার মেজর লিগ সকারের প্লেয়ার অব দ্য মান্থ মেসি
প্রথমবার মেজর লিগ সকারের প্লেয়ার অব দ্য মান্থ মেসি
গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৪১
গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৪১
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ