X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টলায় অধরা লক্ষ্য ছোঁয়ার মিশনে বাংলাদেশ

রবিউল ইসলাম, চট্টগ্রাম থেকে
০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৪১আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৪১

২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেবার মাহেন্দ্র সিং ধোনীর দলের বিপক্ষে মিরপুরে টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে। পরে একই ভেন্যুতে শেষ ম্যাচটিতে ৭৭ রানে হারে স্বাগতিকরা। এই হারে ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার সবর্ণ সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ৭ বছর পর সেই ভারতের বিপক্ষে আরও একবার সুযোগ এসেছে হোয়াইটওয়াশ উপহার দেওয়ার। শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতলেই অধরা সেই লক্ষ্য ছোঁয়া হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।

মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের স্লো উইকেটে ভারতকে হারাতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার পরও মিরাজ বীরত্বে দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের পকেটে ভরেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে ব্যর্থ ব্যাটারদের জন্য দারুণ সুযোগ ছন্দে ফেরার। পাশাপাশি ভারতীয় লম্বা ব্যাটিং লাইনআপও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে এমন কন্ডিশনে।

ফলে শনিবারের ম্যাচটি জমজমাট লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দুপুর ১২টায় জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস।

ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে ভারতীয় ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও জহুর আহমেদের পয়মন্ত ভেন্যুর পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলে। এই মাঠে ২৩টি ম্যাচের ফল হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ, বাকি ৮টিতে জিতেছে প্রতিপক্ষ। অবশ্য চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এই মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের দুঃসহ স্মৃতিও আছে স্বাগতিক বাংলাদেশের। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জিতলেও শেষ ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। ৮ মাস আগের পুরনো সেই ম্যাচের কথা স্মরণ রেখেই মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। তাহলেই ভারতকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ দিতে পারবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ১৭তম হোয়াইটওয়াশ করার কীর্তি গড়ার সুবর্ণ সুযোগ মেলাতে পারবে স্বাগতিকরা।

টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ৬ বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিনবার, নিউজিল্যান্ড ও কেনিয়াকে দুবার এবং পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডকে একবার করে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। ১৭তম দল হিসেবে ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু সিরিজ নিশ্চিত হওয়ার পর বেশিরভাগ ম্যাচেই বাংলাদেশে নির্ভার হয়েই খেলতে নামে, আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়ায়!

 শনিবার কি এমন কিছুই ঘটবে? ফিল্ডিং কোচ ম্যাকডারমট অবশ্য স্পষ্ট করেই বলেছেন তাদের কাছে শেষ ম্যাচটির গুরুত্ব অনেকখানি, ‘কাজ এখনও শেষ হয়নি। আমরা জানি, দল হিসেবে আমরা কিছু সাফল্য পেয়েছি, পাশাপাশি আমাদের কিছু ব্যর্থতাও আছে। কিন্তু আমরা কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচকে হালকাভাবে নেই না। আমরা প্রথম ম্যাচের পর সেটাকে পেছনে ফেলে এসে দ্বিতীয় ম্যাচটি জিতেছি। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ কখনো ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারেনি। এটাই এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।’

বড় লক্ষ্য কথা বললেও অনুশীলন দেখে সেটা বোঝা গেলো কমই। কেননা সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন ও অধিনায়ক লিটন দাসকে মাঠেই দেখা গেলো না। ঐচ্ছিক অনুশীলন তারা কেউই মাঠে আসেনি। বাকি যারা মাঠে এসেছেন, তাদের সবাইকেই হালকা মেজাজেই দেখা গেছে। হয়তো শেষ দুই ম্যাচের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয়েছে। মানসিক শক্তি ফিরে পেতেই হয়তো ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।

খালেদ মাহমুদও আশা করছেন ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করা সম্ভব। ভারতকে ২ ম্যাচে হারানোর পরও সুজনের দাবি বাংলাদেশ এখনও নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারেনি। সুজনের মতে, আমরা এখনও আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারিনি। যদিও দুটি ম্যাচ আমরা জিতেছি। তবে টপ অর্ডার থেকে আরও বেশি আশা করি, আরও ভালো ব্যাটিং, আরও ভালো কিছু করতে পারি। বোলারদের পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি, বিশেষ করে চাপের মধ্যে তারা যেরকম বোলিং করেছে। এখন টপ অর্ডারে একটা বড় জুটি, কারও বড় রান দেখার অপেক্ষায়। চট্টগ্রামের উইকেটে যা খুবই সম্ভব। আমরা যদি ভালো ব্যাট করি, ভালো জায়গায় বল করি, আরেকটা জয় খুবই সম্ভব।’

শেষ উইকেটে মিরাজ-মোস্তাফিজের ৫১ রানের জুটিতে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও তাই। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর মিরাজ-মাহমুদউল্লাহর ১৪৮ রানের জুটিতে বড় পুঁজি সংগ্রহ করে। শেষে এসে মোস্তাফিজের অসাধারণ বোলিংয়ে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। অথচ এমন বহু ম্যাচ জয়ের কাছে গিয়ে জয় হাতছাড়া করেছে।

ফিল্ডিং কোচের কথাতে এখানেই উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের, ‘কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ডে কিছু ম্যাচে জয়ের কাছাকাছি এসেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষেও বিশ্বকাপের ম্যাচে জিততে জিততে হেরেছি। সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনাও ছিল বাংলাদেশের। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দলের মতো খেলেছি। বাংলাদেশ সহজে হার মানে না। এর মানে হচ্ছে আমরা প্রায়ই চাপের মুখে খেলছি। জয়-পরাজয় যা–ই হোক না কেন, আমরা এসব ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি জানি, এই সিরিজেও দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ের পর ছেলেরা আরও একটি জয়ের অপেক্ষায় আছে।’

ভারতের অনুশীলন

হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে ভারতীয় শিবিরে ইনজুরির আঘাত। একের পর এক ক্রিকেটার ছিটকে গেছেন ইনজুরিতে। শেষ ম্যাচে রোহিত শর্মাকে ছাড়াই খেলতে হবে সফরকারীদের। চট্টগ্রামের এমন উইকেটে রোহিত নেই, বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক। বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচও সেটি স্বীকার করে নিলেন, ‘সে না খেলায় আমাদের জয়ের সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যাবে। সেদিন রাতে রোহিত কী করেছে, সেটা তো সবাই দেখেছে। সে উঁচু মানের ক্রিকেটার।’

 

/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
নির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
শনিবার জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভানির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ