পূর্বাচলে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনার কথা এক দশক ধরেই শোনা যাচ্ছে। লম্বা সময় চলে গেলেও স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু হবে, হবে করে কয়েক দফায় পিছিয়েছে। সরকার পতনের পর আলোচনায় এই স্টেডিয়ামের ভাগ্য। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম কি দৃশ্যমান হবে? বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন সোমবার এই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া সজীব আজ বিসিবির কার্যালয়ে আসেন। তিনি ঘুরে ঘুরে বিসিবির নানা অবকাঠামো পরিদর্শন করেন। ক্রীড়া উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবির প্রধান নির্বাহী। শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এটা একটা কনসার্ন। দেখেছেন যে, বিভিন্ন কর্মকর্তা যারা বিরোধিতা করেছেন, তাদের অন্যতম বিষয় ছিল এটা। সম্ভবত আগামী বোর্ড সভায় এটা নিয়ে কথা হবে। (টাকা প্রসঙ্গে) এই মুহূর্তে বলতে পারবো না।’
২০১৯ সালে স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা দিলেও কোভিড মহামারীসহ আরও কিছু কারণে গত পাঁচ বছরে স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি বিসিবি। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এই স্টেডিয়ামটির নাম শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম। নৌকার আকৃতির হওয়ার কারণে একে ‘দ্য বোট’ স্টেডিয়ামও বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে উঠা পূর্বাচলে ৩৮ একর জমির ওপর গড়ে উঠবে এই স্টেডিয়ামটি।
<iframe width="1250" height="703" src="https://www.youtube.com/embed/GsR9hMz7Mj8" title="মিরপুর স্টেডিয়ামে কথা বলছেন বিসিবি'র সিইও" frameborder="0" allow="accelerometer; autoplay; clipboard-write; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture; web-share" referrerpolicy="strict-origin-when-cross-origin" allowfullscreen></iframe>
এখন পর্যন্ত দেশের সবগুলো স্টেডিয়াম নির্মাণে জড়িত ছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। অর্থায়ন হতো সরকারিভাবে। কিন্তু শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামটি নির্মাণ হচ্ছে বিসিবির অর্থায়নে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন স্টেডিয়াম প্রজেক্টের কনসালটেন্সির জন্য এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বানের মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হয়। তবে করোনা সংক্রমণসহ নানা কারণে কিছুটা বিলম্বে শুরু হয়েছে এর কার্যক্রম। ২০২৩ সালে স্টেডিয়াম প্রস্তুতের লক্ষ্য থাকলেও সেই সময় পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। এই মুহূর্তে আগামী ২০২৬-২৭ সাল নাগাদ স্টেডিয়ামে নির্মাণ কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ করে বিসিবি।
শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের কাজের অগ্রগতি দেখাশোনার জন্য ‘প্রজেক্ট মনিটরিং সেল’ গঠন করা হয়েছে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া ৫ সদস্যের এই সেলের অনুমোদনও দিয়েছে বোর্ড। প্রজেক্ট মনিটরিং সেল ছাড়াও বিদেশি স্বনামধন্য প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি সর্বশেষ বোর্ড সভাতে অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম নির্মাণে স্বাভাবিকভাবে খরচও বেশি হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় নির্মাণ কাজ পিছিয়েছে বিসিবি। খরচও তাই কয়েক দফা বেড়েছে। কিছু খরচ কমাতে স্টেডিয়াম নির্মাণের ট্যাক্স মওকুফের আবেদনের কারণে নির্মাণ শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার নির্মাণ ট্যাক্স মওকুফ করেছে। তারপরও ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার বেশি নির্মাণ ব্যয় হয়ে যাবে বলে জানা গেছে বিসিবি সূত্রে!
তবে বর্তমান সরকার পতনের পর এই স্টেডিয়ামটির ভাগ্যে কী আছে, এখনই সেটি বলা যাচ্ছে না। অনেক ক্রীড়া সংগঠকের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলেও তারা মুখে কুলুপ এটেছেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বাচলে স্টেডিয়াম হলেও এই স্টেডিয়ামের নাম ও ডিজাইন পরিবর্তন হচ্ছে।