X
বুধবার, ০১ মে ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে টাইগারদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি

রবিউল ইসলাম, কলকাতা থেকে
২৭ মার্চ ২০১৬, ১৬:৫৪আপডেট : ২৭ মার্চ ২০১৬, ১৭:০৫

বিশ্বকাপে টাইগারদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়েছে শনিবার রাতেই। রবিবার সকালে দেশে ফিরেছেন মাশরাফিরা। মিশন শেষে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৬ষ্ঠ আসরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী? এই প্রশ্নটাই এখন সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত হচ্ছে। পুরো টুর্নামেন্টে ভালো ক্রিকেট খেলেছে লাল-সবুজরা। তারা জানান দিয়েছে এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও উত্থান হয়েছে তাদের। তবে ম্যাচ জিততে না পারায় উন্নতির মানদণ্ডটা বিচার করা যায়নি!
এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেই ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন মাশরাফিরা। ধর্মশালায় বাংলাদেশকে বিশ্বকাপের প্রাথমিক রাউন্ড খেলতে হয়েছে আইসিসির সহযোগী তিন দেশের বিপক্ষে। ৯ মার্চ প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আট রানের জয় দিয়ে টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করে তামিম-সাকিবরা। আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ তামিমের ৮৩ রানের ওপর দাঁড়িয়ে ১৫৩ রানের ইনিংস খেলে। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে আইরিশদের ইনিংস ১৪৫ রানেই থেমে যায়।

ধর্মশালাতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় আইরিশদের বিপক্ষে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। তবে বাংলাদেশ ওই ম্যাচে ব্যাটিং অনুশীলনটা করে নিয়েছিল। ১২ ওভারের ম্যাচে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ ৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান করে। এই ম্যাচেও তামিম ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন।

১৩ মার্চ প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচটিতে ওমানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। দুই দলের জন্যই ম্যাচটি অলিখিত ফাইনালে রূপান্তরিত হয়। ডি/এল পদ্ধতিতে ৫৪ রানে জিতে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার টিকিট নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, এই ম্যাচটি বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইতিহাস হয়ে থাকবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল।

ওমানের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০৩ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস। ৬৪ বলে ১০ চার ও ৫ ছয়ে তিনি তার ইনিংসটি সাজান। ওয়ানডে ও টেস্টের মতো বাংলাদেশের ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের নাম ক্রিকেটের বাইবেলে আজীবন লেখা থাকবে। এই বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাপ্তি।

ধর্মশালাতে প্রাথমিক রাউন্ড শেষ করে বাংলাদেশ কলকাতার উদ্দেশে উড়াল দেয়। সেখানে মূল পর্বের প্রথম ম্যাচে তাদের জন্য অপেক্ষা করে পাকিস্তান। এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে বিদায় করে দিয়ে ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে এমনটাই ভেবেছিল টাইগার ভক্তরা। কিন্তু মূল পর্বের শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ১৪ মার্চ পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরে যায় ৫৫ রানে।

মূল পর্বের শুরুটা বাজেভাবে করে বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে কলকাতা ছাড়েন টাইগাররা। ওখানে যাওয়ার আগে আইসিসি জানিয়েছিল অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে পরীক্ষা দিতে হবে তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানিকে। আইসিসির কথায় সানি ১৩ মার্চ ও তাসকিন ১৪ মার্চ পরীক্ষা দেন। সবাই ভেবেছিল সানি হয়তো উতরে যেতে পারবেন না। কিন্তু নিশ্চিতভাবে পরীক্ষায় পাস করবেন তাসকিন। মাশরাফিসহ টিম ম্যানেজমেন্ট ধরেই নিয়েছিলেন তাসকিন বোলিংয়ের বৈধতা পাবেন।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাসকিন ও সানিকে সাময়িকভাবে অবৈধ ঘোষণা করে আইসিসি। এমন ঘটনার প্রভাব দলের মধ্যেও পড়ে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচের আগেরদিন ভেঙে পড়েন মাশরাফি। এর কারণও আছে। আগের ম্যাচগুলোতে নিয়মিত মূল একাদশে খেলেছিলেন তাসকিন ও সানি। প্রথম ম্যাচ হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রলিয়ার বিপক্ষে দুইজন মূল বোলার ছাড়া নামতে হয়েছে মাশরাফিদের। ওইদিন অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি তামিমও। তারপরও মাশরাফিরা অসিদের বিপক্ষে লড়াই করেছে খুব ভালোভাবেই। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হারে ৩ উইকেটে।

তৃতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে এগিয়ে ছিল টাইগাররা। শেষ ৩ বলে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২ রান। ওখান থেকে ম্যাচটি হেরে যায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং করে ভারতকে বাংলাদেশের বোলাররা ১৪৬ রানেই আটকে রাখে। জবাবে খেলতে নেমে ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।  ওই হারের পরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় মাশরাফিদের।

এরপর আবার কলকাতায় ফিরে আসেন মাশরাফিরা। উদ্দেশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলা। শেষটা ভালে করতে চেয়েছিলেন মাশরাফিরা। কিন্তু পারেননি। হার দিয়েই শেষ হয়েছে তাদের বিশ্বকাপ মিশন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বাজে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। মাশরাফিরা নিউজিল্যান্ডের বোলারদের তোপে মাত্র ৭০ রানে অলআউট হয়। এমন একটি বাজে দিনে মুস্তাফিজ ছিলেন উজ্জ্বল। তিনি এদিন টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন। ২২ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নেন। এটি এখন পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার।

ম্যাচ জিততে না পারায় বাংলাদেশের এই ছোট খাটো সাফল্যগুলো চোখে পড়ছে না। তারপরও নিঃসন্দেহে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ দারুণ ক্রিকেট খেলছে।

/এমআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি অনিক, সম্পাদক জাওহার
ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি অনিক, সম্পাদক জাওহার
মুম্বাইকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে লখনউ
মুম্বাইকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে লখনউ
তপ্ত রোদেও থামে না তাদের কাজ
আজ মহান মে দিবসতপ্ত রোদেও থামে না তাদের কাজ
মদ ছেড়ে বললেন, ‘মাইলফলক’
মদ ছেড়ে বললেন, ‘মাইলফলক’
সর্বাধিক পঠিত
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
এক ফ্রেমে এত ‘সুন্দরী’, স্মৃতিকাতর সকলেই!
এক ফ্রেমে এত ‘সুন্দরী’, স্মৃতিকাতর সকলেই!
সাতক্ষীরার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড 
সাতক্ষীরার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড 
আজকের আবহাওয়া: তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস