ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনালদো বা রোনালদিনহো যা অর্জন করতে পারেননি, নেইমার কি তা পারবেন? পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও অন্য নানা শিরোপা জেতা হলেও ব্রাজিলের সাফল্যগাথায় যে অধ্যায়টি নেই তা হলো অলিম্পিক ফুটবলে একটি স্বর্ণ পদক। কাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় প্রবল প্রতিপক্ষ জার্মানির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়বে ব্রাজিলের এই স্বপ্ন!
রোনালদো ১৯৯৬ সালে আর রোনালদিনহো ২০০৮ সালে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অধরা স্বর্ণ পদকটি গলায় ঝুলাতে। কিন্তু তাদের কাছে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে এতদিন। কাল আবার সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার পালা। আর নেইমারকে ঘিরেই ঘুরপাক খাচ্ছে ফুটবল পাগল ব্রাজিলের সব প্রত্যাশা। ২৪ বছর বয়সী নেইমারের মনে এখনও আঘাতটা জ্বলজ্বলে, চার বছর আগে লন্ডনে মেক্সিকোর কাছে ফাইনালে হেরে গিয়েছিল নেইমারের ব্রাজিল। এবার নিজ মাঠে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে না পারলে আবার কবে নেইমার শিরোপার কাছাকাছি যাবেন তা সময়ই বলতে পারবে! মেসি কোনও আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে পারেননি; এ নিয়ে যতটা আলোচনা হয়। একই বিষয়ে নেইমারকে নিয়ে ততটা আলোচনা হয় না। নেইমার ২০১৩ সালে কনফেডারেশন কাপ জিতলেও এটিকে আন্তর্জাতিক মাপে বড় সাফল্য ধরা হয় না। মেসি তো ২০০৮ সালে বেইজিংয়ে অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ পদক জিতেছেন নেইমারের সামনে। এক্ষেত্রে মেসিকে ছোঁয়ার পালা। তিনবার অলিম্পিক রৌপ্য পদক জিতেছে ব্রাজিল। যেটা ছিল ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালে এবং সর্বশেষ ২০১২ সালে। এবার নিজ মাঠে এ ধারা ভাঙার পালা।
টুর্নামেন্টে নেইমারের সূচনাটা ভালো ছিল না মোটেও। ইরাক ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ড্র করার পর দলকে ছন্দে ফেরান তিনি। গ্রুপের শেষ খেলায় ডেনমার্ককে ৪-০, কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়াকে ২-০ ও সেমিফাইনালে হন্ডুরাসকে ৬-০ গোলে হারানোর পর ব্রাজিল এখন তৈরি জার্মানির চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরেছিল ব্রাজিল। সে ম্যাচে ছিলেন না নেইমার, তাই ব্রাজিল যেন হয়ে গিয়েছিল ত্রাতাহীন। ব্রাজিলের সামনে তাই রয়েছে প্রতিশোধ নেওয়ারও সুযোগ! নেইমার এ পর্যন্ত ৭০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪৬ টি গোল করলেও ব্রাজিল ফুটবলে ব্যক্তি নৈপুণ্যের কোনও মূল্য নেই। বরং ২০১১ সালে কোপা আমেরিকা, ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ, ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকা ও চলতি বছরের শতবর্ষী কোপা আমেরিকার ব্যর্থতাই ব্রাজিলবাসীকে মর্মাহত করে। নেইমার কি পারবেন সেই দুঃখ ভুলিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোঁটাতে?
/এফআইআর/