চলতি মৌসুমে উড়তে থাকা বার্সেলোনার বিপক্ষে জমজমাট এক ম্যাচ উপহার দিলো ইন্টার মিলান। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শুরুতেই দুই গোল দিয়ে কাতালানদের ভড়কে দিতে চেয়েছিল ইতালিয়ান জায়ান্টরা। কিন্তু হ্যান্সি ফ্লিকের দলের মনোবলে আঘাত করতে পারেনি তারা। দুইবার পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে মিলান ক্লাবকে রুখে দিয়েছে বার্সা। বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ ড্র হয়েছে ৩-৩ গোলে।
শুরুটা স্বপ্নের মতো হয়েছিল ইন্টারের। বক্সের মধ্যে ডুমফ্রাইসের ক্রস বার্সা বিপদমুক্ত করতে চাইলেও পারেনি। ইন্টার ফের বল দখলে নেয়। এবারও ডুমফ্রাইস ক্রস দেন। থুরাম তার মার্কারের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেই ডানপায়ের চমৎকার ফ্লিকে কিপারকে পরাস্ত করেন। ৩৪ সেকেন্ডেই ইতালিয়ান ক্লাবের লিড।
ষষ্ঠ ও নবম মিনিটে ডি ইয়াং ও ইয়ামাল বক্সের মধ্যে ফাউলের শিকার হলেও তাদের পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি।
কিছুক্ষণ পর দুই দলই প্রতিপক্ষের প্রান্তে শট নিলেও সুযোগ নষ্ট করে।
সমতা ফেরাতে মরিয়া বার্সা গোলের বেশ কাছে ছিল। ১৫ মিনিটে রাফিনহার বাঁ পায়ের ক্রস ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন ইন্টার কিপার ইয়ান সমার। কিন্তু ২১তম মিনিটে ইন্টার ফের জাল কাঁপিয়ে বার্সাকে আরও পেছনে ফেলে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল অ্যাকারবি হেড করলে ডুমফ্রাইসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে অতিথিরা স্কোর ২-০ করে।
ভেঙে পড়েনি বার্সা। বরং মুহুর্মুহু আক্রমণে গেছে তারা। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার তিন মিনিট পর ইয়ামাল এক গোল শোধ দেন। ডান উইংয়ে বল পেয়ে মিখিতারিয়ানকে নাচিয়ে বক্সে ঢুকে কোনও বাধা ছাড়াই বাঁ পায়ের শট নেন তিনি লক্ষ্যে। বাঁ দিকের পোস্টে লেগে বল জালে ঠিকানা খুঁজে নেয়।
২৭তম মিনিটে ইয়ামালের শট আঙুলের ছোঁয়ায় দিকভ্রষ্ট করেন ইন্টার কিপার। বল বারে লেগে নিরাপদে ফিরে আসলে সমতা ফেরাতে পারেনি বার্সা।
দানি ওলমো ডি ইয়াংয়ের পাস ধরে দুর্বল শট নিলে সরাসরি তা সমারের হাতে জমা পড়ে। মিনিটখানেক পর ইয়ামালের নিচু শট সমার ডাইভ দিয়ে বিপদমুক্ত করেন। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডকে থামাতে তার পেছনে দুজন মার্কার লাগিয়ে দেয় ইন্টার। তবুও জায়গা খুঁজে নিয়ে বক্সের ভেতরে ক্রস দিতে থাকেন ইয়ামাল। একবার তো সমার বল ছুঁতে না পারলেও বাসতোনি ক্লিয়ার করেন।
৩৮ মিনিটে আসে বার্সার মাহেন্দ্রক্ষণ। পেদ্রির ক্রসে বল পেয়ে বক্সের বাঁদিক থেকে রাফিনহার হেড পাসে তোরেস সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ধার বাড়ায় ইন্টার। ডিমাক্রন ৫০তম মিনিটে গোলবারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে মারেন। ৬৩ মিনিটে কর্নার থেকে কালহানোগলুর নেওয়া শটে লাফিয়ে হেড করে জাল কাঁপান ডুমফ্রাইস। দ্বিতীয়বার এগিয়ে যায় ইন্টার। কিন্তু তাদের লিড দুই মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। ওলমোর কর্নার কিকে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রাফিনহার জোরালো শট ক্রসবারে আঘাত করে সমারের শরীরের পেছনে লেগে আত্মঘাতী গোল হয়। ৬৫ মিনিটে সমতা ফেরায় বার্সা।
৭৭ মিনিটে ডুমফ্রাইসের ক্রস বার্সার ব্যাকলাইন ছাড়িয়ে সামনে বল পেয়ে জাল কাঁপান মিখিতারিয়ান। কিন্তু ভিএআরে অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়।
বার্সা ৮৮ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো। তোরেসের পাসে ইয়ামালের উড়িয়ে মারা ক্রস গোলবারে লেগে ফিরলে ইন্টারের এক ডিফেন্ডার বল বিপদমুক্ত করেন।
তিন মিনিটের স্টপেজ টাইমের প্রথম মিনিটে রাফিনহার জোরালো শট আঙুলের ছোঁয়ায় কর্নার বানান সমার। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ গোলের দেখা পায়নি কোনও দল।
দুই দল সমানে সমান অবস্থানে থেকে আগামী সপ্তাহে সান সিরোতে মুখোমুখি হবে।