এশিয়ান কাপে নারীদের বাছাই ফুটবলে রবিবার থেকে বাংলাদেশের অভিযান শুরু হচ্ছে। মিয়ানমারের ইয়াংগুনে ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনের মুখোমুখি হবে বাটলারের দল। রবিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সেই ম্যাচের আগে বাস্তববাদী বাংলাদেশের কোচ।
গ্রুপের তিন দলের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১২৮) পেছনে কেবল তুর্কমেনিস্তান (১৪১)। বাহরাইনের (৯২) চেয়েও অনেক এগিয়ে স্বাগতিক মিয়ানমার (৫৫)। বাছাইয়ের আট গ্রুপের সেরা আট দল পাবে মূল পর্বে খেলার টিকিট। তাই জয় ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পাশাপাশি বেশ কৌশলী। তার আশা, নিজেদের সেরাটা দিয়ে মেয়েরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বাটলার দেশের নারী ফুটবলের অবস্থা তুলে ধরে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জন্য পথটা মসৃণ নয় মোটেও। আমরা একটা প্রকল্পের মধ্যেই তিনটা চালাচ্ছি। জাতীয় দল, অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০ দল। আমাদের ফ্যাসিলিটিজ কম। এ কারণেই তিনটা গ্রুপের কার্যক্রম একসাথে চলছে। সিনিয়র দলে ৫০ শতাংশ খেলোয়াড়ই অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সী। ফলে আমাদের পাইপলাইনটা ভালো আছে, বয়সভিত্তিক দলের মেয়েরাও খেলতে পারে জাতীয় দলে।’
এরপরও মিয়ানমারে ইতিবাচক ফল চাইছেন এই ব্রিটিশ কোচ, ‘ফ্যাসিলিটিজ কম থাকলেও আমরা ইতিবাচক। সীমিত সুবিধার মধ্যেই ফেডারেশন র্যাঙ্কিংয়ে উপরে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে ম্যাচের আয়োজন করেছিল (সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে)। সব মিলিয়ে এই টুর্নামেন্টে সবাই পুরোপুরি আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে শুরু করতে চায়।’
প্রতিপক্ষ বাহরাইন কেন, গ্রুপে কোনও দলকে অবজ্ঞা করছেন না বাংলাদেশ কোচ, ‘আমি মনে করি, ফুটবলে আপনি কোনও দলকে খাটো করে দেখতে পারেন না। যে কোনও দলই আপনার পথ রোধ করে দাঁড়াতে পারে। মিয়ানমার শক্তিশালী, বাহরাইনও শারীরিকভাবে শক্তিশালী এবং তরুণ দল, উন্নতিও করছে। আমি মনে করি, যে কোনও দলকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না।’
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পেশাদার মানসিকতা। বাটলারের কথায় তেমনই সুর, ‘আমরা পেশাদার মনোভাব নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। নিজেদের কাজগুলো করেছি। আমাদের ভিডিও এনালিস্ট সব প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে। আমি মনে করি, ফুটবল যে কোনও সময় আপনাকে বিস্মিত করতে পারে।’
মিয়ানমারের আগে জর্ডানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ড্র করেছে বাংলাদেশ। বাটলার তাই আত্মবিশ্বাসী, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে একেবারেই তরুণদের নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু শিখেছে মেয়েরা। ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে ড্র আমাদের জন্য একটা বেঞ্চমার্ক। এই সফরগুলো আমাদের দেখিয়েছে আমরা কোথায় আছি, কী করতে পারি।’
গ্রুপ একটু কঠিন হলেও বাছাই পার হওয়ার সুযোগ আছে বলে বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ কোচ, ‘আমাদের যে বাছাই পেরুনোর সুযোগ আছে, সেটা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। বাংলাদেশ কখনই কোয়ালিফাই করেনি, তবে আমরা একটা সফরে আছি। নতুনদের দারুণ উন্নতিতে আমি খুবই ইতিবাচক। আমি মনে করি, আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে। একটার পর একটা ধাপ দিয়েই ভিত তৈরি হয়। সত্যি বলতে, যদি মেয়েরা তাদের সেরাটা দিতে পারে, তাহলে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারি।’
বাহরাইন কোচ মোহাম্মেদ আদনান হুসেইন সবশেষ তিন ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ড্র ও সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের প্রসঙ্গ নিয়ে এসে বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। অল্প সময় অনুশীলন করেছি, তিনটা ম্যাচও খেলেছি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমরা এখানে আসতে পেরেছি। অভিজ্ঞ ও নবীনের মিশেল আছে আমাদের দলে। আশা করি, ভালো কিছু মেলে ধরতে পারবো।’