X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্পোর্টিং ক্লাব নিয়ন্ত্রণে আইন সংস্কারের সময় এসেছে: ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

জামাল উদ্দিন
২৩ অক্টোবর ২০১৯, ২২:১৫আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৫১

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

দেশের সব স্পোর্টিং ক্লাব নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় প্রচলিত আইনের সংস্কার চায়  বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি বলেন, ‘দেশের স্পোর্টিং ক্লাব নিয়ন্ত্রণে আইন সংস্কারের সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ বুধবার (২৩ অক্টোবর) বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্যাসিনো-কাণ্ডের পর সময় এসেছে ক্লাবগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আইনগুলোর সংস্কার ও পরিবর্তনের। এ ছাড়া, এসব কারণে যে ভালো মানুষেরা ক্লাবগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তারা যেন আবার ক্লাবগুলোর দায়িত্ব নেন, সেজন্য আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবো।’

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লিমিটেড ক্লাবগুলোকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অন্য ক্লাবগুলোকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় রেজিস্ট্রেশন দেয়। যে কারণে ক্লাবগুলোর ওপর আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে যে মন্ত্রণালয়ই তাদের রেজিস্ট্রেশন দিক, সেখানে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকা উচিত। কারণ, এ ধরনের খারাপ লোকদের (ক্যাসিনো-কাণ্ডের হোতা) ধরার জন্য যে জনবল প্রয়োজন, সেটা আমাদের আছে। ফেডারেশন আছে; তারা তখন সারাক্ষণ মনিটরিং করতে পারবে। অনেক ফেডারেশন আছে, যারা ক্লাবগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে যায়। দেখা গেলো, কয়েকটি ক্লাব মিলে লিগের খেলা বয়কট করলো। অনেক সময় দলবদলেও অংশ নিতে চায় না ক্লাবগুলো। আমরা তখন কোনও পদক্ষেপ নিতে পারি না। ফেডারেশনগুলো তাদের ধরতে পারে না। আইনগতভাবেই আমরা পারি না। ক্লাবগুলোকে যদি ক্রীড়াঙ্গনে থাকতে হয়, তাহলে তাদের অবশ্যই ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসতে হবে। এর কোনও বিকল্প নাই।’

ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ও জুয়ার মতো কর্মকাণ্ডে নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন জানিয়ে জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘এ ধরনের অনৈতিক কাজে যারা জড়িত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি ভেতরের বিষয়গুলোকে প্রকাশ্যে বের করে নিয়ে এসেছেন। ক্লাবের নামে ক্যাসিনোসহ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি বা সংগঠক—যারাই জড়িত থাকুক না কেন, অবশ্যই তাদের শাস্তি পেতে হবে।’

স্পোর্টিং ক্লাবগুলো কখনোই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনও প্রয়োজনে, কখনও কোনও সমস্যা হলে খেলাধুলাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য শুধু ফেডারেশনগুলোকে ডাকতে পারি। তারা আমাদের ডাকে সাড়া দেয়; কিন্তু ক্লাবগুলো সাড়া দেয় না। তারা মনে করে, তারা স্বাধীন ও স্বাবলম্বী। কারণ, ক্লাবগুলো পরিচালনা করে সাধারণত ধনী ব্যক্তিরা। আইনগতভাবেও তারা আমাদের কাছে দায়বদ্ধ নয়। তারা আমাদের কাছে আসে না। তাই তারা যদি না খেলে, তাদের টাকার উৎস কী বা কোত্থেকে আসছে, সেই টাকা কীভাবে খরচ করা হচ্ছে, আসলেই খেলাধুলার উন্নয়নে খরচ করছে কিনা—এসব বিষয়গুলো কোনোভাবেই আমরা জানতে পারি না।’

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়, করুক। কিন্তু সেই টাকাটা সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে কিনা, নাকি বেহাত হচ্ছে—সেটা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তদারক করবে। এটা হলে ক্লাবগুলো আবার তাদের হারানো গৌরব ফিরে পাবে। খেলাধুলা এমন একটি বিষয়, এটাকে অন্তর থেকে ভালোবাসতে হবে। যে কারণে সবাইকে দিয়ে কিন্তু খেলাধুলা হয় না। খেলাধুলার জন্য কাজ করাও হয় না। কাজ করতে হলে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতে হবে। স্পোর্টস অঙ্গনে অনেকেই জীবন পার করে দিয়েছে। খেলাধুলার জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেকে বিয়ে পর্যন্ত করেনি। অবস্থাপন্ন বিভিন্ন ব্যবসায়ী আছেন, যারা সারাজীবন খেলাধুলা চালিয়েছেন। এ ধরনের কিছু মানুষ হয়তো এসব ক্যাসিনোর কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। আমার মতে, তাদের আবার আকৃষ্ট করা উচিত। বাংলা ট্রিবিউনের মাধ্যমে তাদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন ক্লাবগুলোর দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নিয়ে তারা যেন ক্লাবগুলো পরিচালনা করেন। আমার দরজা তাদের জন্য খোলা থাকবে। যেকোনও প্রয়োজনে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।’

জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘আমরা ফেডারেশনগুলোর কাছে জবাবদিহি চাইতে পারি। কী ধরনের খেলার আয়োজন করছে, কী করছে, সারাবছর কী করছে বা সামনে কী করবে—এসব বিষয় আমরা জানতে চাইতে পারি এবং তারাও জানাতে বাধ্য। কিন্তু ক্লাবগুলো মনে করে, তাদের আমরা কিছু করতে পারবো না। আজকে ক্যাসিনো-কাণ্ডের পর কিন্তু বাণিজ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আর দায়ভার নিচ্ছে না। এসব মন্ত্রণালয় তাদের কাছ থেকে হিসাবনিকাশ নেয় কিনা, সেটাও আমরা বলতে পারবো না। ওইসব মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করেন, তারা সঠিকভাবে খোঁজখবর নিয়েছে কিনা, আমার সন্দেহ রয়েছে। আর আমাদের কাছে হলে কী হতো, আমরা তো সারাবছর খেলাধুলা চালাই। সারাবছর আমাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকতো। তাহলে বিভিন্নভাবে আমরা তাদের সহযোগিতা করতে পারতাম। অর্থনৈতিক সাপোর্ট দিতে পারতাম। তারাও তখন জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতো।’

/এমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত