X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

অটোরিকশা চালিয়েও দ.এশিয়াতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন মোস্তাকিম

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৫৩আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১৬:০০

দরিদ্র পরিবারে জন্ম মোস্তাকিম হোসেনের। বাবা মুন্না শেখের তাই চার সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। কোনও মতে অটোরিকশা চালিয়েই সংসার সামাল দিয়েছেন। এমন পরিবারের মূল উপার্জনকারী অসুস্থ হয়ে পড়লে যা হয়; মোস্তাকিমদের অবস্থাও হয়েছিল তেমন। অসহায় হয়ে পড়েছিল পুরো পরিবার।

চরম দুরবস্থায় হাল ধরতে এগিয়ে আসেন ছোট ছেলে মোস্তাকিম। বাবার পেশাটিকে বেছে নেন; চালাতে থাকেন অটোরিকশা। ‘খেলোয়াড়ি সত্ত্বা বিসর্জন’ দিয়ে পরিবারের সহায়ক শক্তি হওয়াতেই আনন্দ খুঁজে নিতে থাকেন। অবশ্য দুই মাস পর মোস্তাকিমের ভাগ্য ফেরাতে অবদান রাখেন স্থানীয় এক শিক্ষা কর্মকর্তা। তার সাহায্যে আবারও ফিরে আসেন খেলায়। এখন তো দক্ষিণ এশিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৫ ব্যাডমিন্টন দ্বৈতে সিফাত উল্লাহ গালিবের মতো মোস্তাকিমও বাংলাদেশ দলের শিরোপাজয়ী সদস্য!

মোস্তাকিমের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুরে। বাবা অটোরিকশা চালক আর মা অন্যের বাসায় কাজ করে থাকেন। খেলোয়াড়ি জীবনে এই সময় তার সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ বাবার অসুস্থতায় ঢাকার জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে পারেননি। যেখানে জীবন চালানোই কঠিন হয়ে যায় তখন ব্যাডমিন্টন তার কাছে ছিল বিলাসিতা!  

বাংলা ট্রিবিউনের কাছে সেই জীবন যুদ্ধের গল্পই শোনালেন মোস্তাকিম, ‘বাবার অসুস্থতার কারণে অটোরিকশা চালাতে হয়েছে, মা-ও তখন অসুস্থ। বড় ভাই হার্ডওয়ারের দোকানে কাজ করতো। তাতেও সংসার চলতো না। তখন বাধ্য হয়ে রিকশা চালিয়েছি। এই সময় একজন শিক্ষা কর্মকর্তা সাহায্যে এগিয়ে আসেন। অর্থ সহায়তাও করেন। আমাকে খেলতে উৎসাহিত করেন।’

বছরের শুরুতে বিরামপুর কলেজিয়েট স্কুলের হয়ে আন্তঃস্কুল ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন হয়ে এলাকায় হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মোস্তাকিম। শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকারের ঠিক তখনই দৃশ্যপটে পদার্পণ। জহুরির মতোই তিনি রত্ন চিনতে ভুল করনেনি। তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াতেই তো মোস্তাকিম দক্ষিণ এশিয়ার সেরা।

তাতে বাংলাদেশও এই প্রথম দক্ষিণ এশীয় ব্যাডমিন্টনের কোনও আসরে সোনার পদক জেতার গৌরব অর্জন করলো। এর আগে এই অঞ্চলে ব্র্রোঞ্জই ছিল দেশের সর্বোচ্চ অর্জন। আর ভারতকে তো ভাবা হয় সবচেয়ে শক্তিশালী দল। সেই দলটিকে তাদের কোর্টে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়।

মোস্তাকিম তাই থেমে থাকতে চাইছেন না। ঢাকাতে স্থানীয় এক বড় ভাইয়ের একাডেমিতে খেলছেন। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই শাটলার স্বপ্ন দেখেন একসময় বড়দের আসরেও দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনবেন। সেজন্য সবার সহযোগিতাও কামনা করছেন তিনি, ‘আমি চাই আরও এগিয়ে যেতে। বড় খেলোয়াড় হতে। তাতে করে দেশের সুনাম আরও উজ্জ্বল হবে। তবে সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। যেন পরিবারের পাশাপাশি নিজেও ভালো খেলোয়াড় হতে পারি।’

/টিএ/এফআইআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী