চরের বসতবাড়ি অধিগ্রহণ করে ব্রহ্মপুত্রের তীরে নতুন শহর নির্মাণের প্রতিবাদে এবং ঘরবাড়ি বাদে সব ইউনিউয়ন থেকে সমানভাবে জমি অধিগ্রহণের দাবিতে ময়মনসিংহে সমাবেশ করেছেন চরাঞ্চলে বসতভিটা রক্ষা কমিটির সদস্যরা। ময়মনসিংহের চরাঞ্চলে বসতভিটা রক্ষা কমিটির চার মাস ধরে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকালে জয়বাংলা বাজার সংলগ্ন চরআনন্দিপুর রেঁনেসা গার্লস হাইস্কুল মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা ময়মনসিংহ বিভাগের প্রশাসনিক ও নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চরাঞ্চলের জমি অধিগ্রহণে বসতভিটা রক্ষা কমিটির ‘বিকল্প’ প্রস্তাব অনুযায়ী ‘বসতভিটার বাইরে’ চার ইউনিয়নে সমহারে জমি অধিগ্রহণ করার দাবি জানান। তারা বলেন, ‘২০ হাজার পরিবারকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে নতুন নকশা অনুযায়ী শহর গড়তে দেওয়া হবে না। যদি জোর-জবরদস্তি করে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হয় তাহলে জীবনের বিনিময়ে হলেও বাপ-দাদার ভিটা রক্ষা করা হবে। আর যদি আগের নকশা অনুযায়ী ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নতুন শহর গড়ে তোলা হলে তাহলে চরবাসীর কোনও আপত্তি থাকবে না।’ বক্তারা আরও বলেন, চরনিলক্ষীয়া, চরঈশ্বদিয়া, চরসিরতা ও খাগডহর ইউনিয়নে জমি সমহারে অধিগ্রহণ করে নতুন শহর গড়া হলেও থাদের কোনও আপত্তি থাকবে না। অন্যথায় এক ইঞ্চি পরিমাণ জমিও ছাড় হবে না।
দুই প্রবীণ কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। এছাড়াও ‘পূর্বের নকশা বহাল করো, নদীর তীরে শহর গড়ো’, ‘আন্দোলনের দিচ্ছে ডাক, চরাঞ্চলবাসি জাগরে জাগ’, ‘তোমাদের শহর আমাদের মাটি, এসো মোরা মিলে মিশে থাকি’ ইত্যাদি স্লোগানে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নারী-শিশুসহ হাজারো জনতা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। 
উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রথমে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে এক হাজার ২২০ একর জমিতে নতুন শহর গড়ার নকশা প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ওই নকশা বাতিল করে নতুন নকশা অনুযায়ী চার হাজার ৩৬৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকেই চরাঞ্চলের মানুষ উচ্ছেদের আশঙ্কায় বসতভিটা রক্ষার দাবিতে গত চার মাস ধরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানসহ লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
চরগোবিন্দপুর গ্রামের আফতাব উদ্দিন মেম্বারের সভাপতিত্বে শুক্রবারের ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বসতভিটা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয়ের ভাইস প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বাচ্চু, চরদুর্গাপুর গ্রামের মাওলানা ফজলুল হক, চরসিরতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, চরভবানিপুর গ্রামের শাহ আলম বাদশা মেম্বার, কোনাপাড়া গ্রামের নাদিম মোস্তফা, চরআনন্দিপুর গ্রামের শাহজাহান, চরগোবিন্দপুর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া, চরভবানীপুর গ্রামের খোরশেদ খান খোকন, আবুল মুনসুর, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. হারুনুর রশিদ, প্রফেসর হাবিবুর রহমান, কাজী রফিকুল ইসলাম, ফজলুর রহমান প্রমুখ।
/এফএস/
আরও পড়ুন-
