X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘টোয়াইলাইট’ ছাড়া হতো না ‘ওপেনহাইমার’, জেনে নিন এবারের অস্কারের ১৭ গল্প

জনি হক
জনি হক
০৭ মার্চ ২০২৪, ২১:৪৯আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪, ২১:৫০

অস্কারের ৯৬তম আসরের মনোনয়নের ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে হলিউডে কত দ্রুত ভাগ্য বদলাতে পারে। ২০২২ সালে ‘ব্যাবিলন’ বক্স অফিসে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯৫তম অস্কারে তিনটি মনোনয়ন পেলেও খালি হাতে ফিরেছে। একই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী মার্গো রবি ৯৬তম অস্কারে ২০২৩ সালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ‘বার্বি’র বিজ্ঞাপন হিসেবে হাজির হতে যাচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করা ছবিটি অস্কারের আটটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। একই দিনে ‘বার্বি’ ও ‘ওপেনহাইমার’ চলচ্চিত্র দুটির মুক্তির ঘটনায় ‘বারবেনহেইমার’ শব্দটি বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়েছে।

৯৬তম অস্কারে মনোনীতরা সবাই অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের নিমন্ত্রণে এক দুপুরে মধ্যাহ্নভোজে জড়ো হয়েছিলেন। প্রতিবছর অস্কারের আগে দলীয় ছবি তোলা একটি ঐতিহ্য। এবারের অস্কারে ঘটতে পারে এমন ১৭টি মজার তথ্য, অদ্ভুত ও সম্ভাব্য মাইলফলক জেনে নিন।

১.

‘টোয়াইলাইট’ ছাড়া হতো না ‘ওপেনহাইমার’

‘টোয়াইলাইট’ তারকা রবার্ট প্যাটিনসনকে নিয়ে ‘টেনেট’ ছবিটি পরিচালনার পরেই পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারক জে. রবার্ট ওপেনহাইমারের বায়োপিক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন ক্রিস্টোফার নোলান। ‘টেনেট’-এর দৃশ্যধারণ শেষে নোলানকে ওপেনহাইমারের বক্তৃতার সংকলন উপহার দেন প্যাটিনসন। পরে সেগুলো পড়ার পর চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুপ্রাণিত হন নোলান। সেক্ষেত্রে প্যাটিনসনের কাছে দর্শকেরা ঋনী থাকতেই পারেন!

২.

‘বার্বি’র মনোনয়ন পাওয়ার ঘটনায় ইতিহাস

অস্কারের সেরা পরিচালক ও সেরা অভিনেত্রী বিভাগে উপেক্ষিত থাকলেও সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘বার্বি’র মনোনয়ন পাওয়ার ঘটনায় ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। ‘বার্বি’র নির্মাতা ও সহ-চিত্রনাট্যকার গ্রেটা গারউইগ একমাত্র পরিচালক, যার প্রথম তিনটি ছবি অস্কারের সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনীত হয়েছে। ‘বার্বি’র আগে মনোনয়ন পেয়েছে ‘লিটল উইমেন’ (২০১৯) ও ‘লেডি বার্ড’ (২০১৭)।

এবারের আসরে ‘বার্বি’ যে আটটি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কেবল একটিতে জয়ের আশা প্রবল। সেরা মৌলিক গান বিভাগে ‘হোয়াট ওয়াজ আই মেড ফর?’-এর জন্য অস্কার জিততে পারেন বিলি আইলিশ ও তার ভাই ফিনিয়াস ও’কনেল। এর মাধ্যমে ব্র্যাডলি কুপার পরিচালিত ‘অ্যা স্টার ইজ বর্ন’-এর প্রতিফলন দেখা যায়। এটিও অস্কারে আটটি মনোনয়ন পেয়েছিল, কিন্তু লেডি গাগার ‘শ্যালো’র সুবাদে কেবল সেরা মৌলিক গান পুরস্কার জিতেছে।

৩.

অভিজাত ক্লাবের হাতছানি

অস্কারের ইতিহাসে ৩৫ বছর বয়সে দু’বার করে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে জিতেছেন সাত জন। তারা হলেন– মেরিল স্ট্রিপ, জোডি ফস্টার, এলিজাবেথ টেলর, বেটি ডেভিস, লুইস রায়নার, অলিভিয়া ডে হাভিল্যান্ড ও হিলারি সোয়াঙ্ক। অভিজাত এই তালিকায় আট নম্বরে নাম লেখাতে পারেন ‘পুয়োর থিংস’ তারকা এমা স্টোন। ২০১৭ সালে ‘লা লা ল্যান্ড’ ছবির জন্য প্রথমবার অস্কার জেতেন তিনি। ৩৫ বছর বয়সে দু’বার করে অস্কারজয়ের কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেননি কোনও অভিনেতা।

৪.

ভাঙতে পারে একযুগের ট্রেন্ড

সেরা চলচ্চিত্রসহ সামনের সারির বিভাগগুলোতে ‘ওপেনহাইমার’ অস্কার জিতবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরমধ্যে যদি আইরিশ তারকা কিলিয়ান মারফি সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান, তাহলে ২০১২ সালের পর আবারও একই ছবির নাম থাকবে সেরা অভিনেতা ও সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে। সর্বশেষ ‘দ্য আর্টিস্ট’ ও এর অভিনেতা জ্যঁ দুজারদাঁর কাছে গেছে এই কৃতিত্ব।

সেরা অভিনেত্রীর বেলায় চিত্রটা ভিন্ন, যা সাম্প্রতিক সময়ে সেরা চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রায়ই মিলে যাচ্ছে। সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে সর্বশেষ তিন বিজয়ী ছবির মধ্যে দুটির তারকা সেরা অভিনেত্রী পুরস্কার জিতেছেন। ‘নোম্যাডল্যান্ড’-এর সুবাদে ফ্রান্সেস ম্যাকডোরম্যান্ড ও ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ান্স’-এর জন্য মিশেল ইয়ো সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন।

৫.

অন্যরকম এক ট্রেন্ড

অস্কারের গত ২২টি আসরের মধ্যে ২০টিতে যেকোনও একটি চলচ্চিত্র কেবল চিত্রনাট্যের জন্য মনোনীত হয়েছে। ব্যস, আর কিছু না! এবারের আসরে জুলিয়ান মুর ও নাটালি পোর্টম্যান অভিনীত ‘মে ডিসেম্বর’ শুধুই সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। এছাড়া অন্য কোনও বিভাগে ছবিটির নাম নেই। অস্কারের ইতিহাসে এর আগে এমন ঘটনার সাক্ষী ‘নাইভস আউট’ (২০১৯), ‘বোরাট’ (২০০৬), ‘মাই বিগ ফ্যাট গ্রিক ওয়েডিং’ (২০০২), “মলি’স গেম” (২০১৭), ‘স্ট্রেইট আউটা কম্পটন’ (২০১৫)।  

৬.

চার দম্পতির ছোটগল্প

‘অ্যানাটমি অব অ্যা ফল’ চলচ্চিত্রের সুবাদে সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনীত জাস্টিন ত্রিয়ে সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগেও জীবনসঙ্গী আর্থার হারারির সঙ্গে যৌথভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন। করোনা মহামারিতে ঘরবন্দি থাকার সময় গল্পটি লিখেছেন তারা।

‘বার্বি’র জন্য সেরা রূপান্তরিত চিত্রনাট্য বিভাগে যৌথভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন গ্রেটা গারউইগ ও নোয়া বাউমবাক। ‘বার্বি’র সুবাদে সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে প্রযোজক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী মার্গো রবি ও তার স্বামী টম অ্যাকারলি। ‘ওপেনহাইমার’ সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনীত হওয়ায় প্রযোজক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ক্রিস্টোফার নোলান ও এমা থমাস দম্পতি।

৭.

বেশিবার মনোনীত, পুরস্কার শূন্য

‘দ্য হ্যাংওভার’ (২০০৯) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনের পর বিভিন্ন ছবিতে অভিনয়, পরিচালনা ও চিত্রনাট্যের জন্য অস্কারে মোট ১২ বার মনোনয়ন পেয়েছেন ব্র্যাডলি কুপার। তবে একবারও অস্কার জিততে পারেননি তিনি। এবারের আসরে ‘মায়েস্ট্রো’র জন্য সেরা অভিনেতা, সেরা প্রযোজক ও সেরা মৌলিক চিত্রনাট্যকার বিভাগগুলোতে মনোনীত হলেও তার খালি হাতে ফেরার সম্ভাবনাই বেশি।

একবারও অস্কার জেতেননি কিন্তু ব্র্যাডলি কুপারের চেয়ে বেশিবার মনোনয়ন পেয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– শব্দ প্রকৌশলী গ্রেগ পি. রাসেল (১৬ মনোনয়ন), সুরকার থমাস নিউম্যান (১৫), গীতিকবি-সুরকার ডায়েন ওয়ারেন (১৫) এবং স্পেশাল ইফেক্ট সুপারভাইজর ড্যানিয়েল সুডিক (১৩)। তালিকায় ব্র্যাডলি কুপার এখন আছেন পাঁচ নম্বরে।

৮.

দুই সমকামীর রেকর্ড

প্রকাশ্যে নিজেদের সমকামী পরিচয় দেওয়া দুই জন প্রথমবারের মতো অস্কারের একই আসরে মনোনয়ন পেয়েছেন, যাদের অভিনীত চরিত্র দুটিও নিজেদের প্রকাশ্যে সমকামী পরিচয় দিয়েছে। তাদের মধ্যে ‘রাস্টিন’ চলচ্চিত্রে নাগরিক অধিকার কর্মী বেয়ার্ড রাস্টিন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে মনোনীত হয়েছেন কোলম্যান ডমিঙ্গো। অন্যদিকে ‘নায়াড’ চলচ্চিত্রে সাঁতারু ডায়ানা নায়াডের বন্ধু ও কোচ বনি স্টল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন জোডি ফস্টার।

নিজেকে প্রকাশ্যে সমকামী পরিচয় দেওয়া একজন অভিনেতাই কেবল এর আগে অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন। ১৯৯৮ সালে ‘গডস অ্যান্ড মনস্টারস’-এ প্রকাশ্যে সমকামী পরিচয় দেওয়া একজনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে মনোনীত হন স্যার আয়ান ম্যাককেলেন।

৯.

বুড়ো হাড়ে ভেলকি!

অস্কারে মোট ১০ বার সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন মার্টিন স্করসেসি। জীবিত পরিচালকদের মধ্যে স্টিভেন স্পিলবার্গকে টপকে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। অস্কারের ইতিহাসে সেরা পরিচালক বিভাগে সর্বাধিক ১২ বার মনোনীত হয়েছিলেন ‘রোমান হলিডে’ ও ‘বেন হুর’ খ্যাত প্রয়াত উইলিয়াম ওয়াইলার।

সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনীত সবচেয়ে বয়স্ক মার্টিন স্করসেসি। এবার ৮১ বছর বয়সে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। তার আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন জন হাস্টন। ১৯৮৫ সালে ‘প্রিৎসি অনার’ চলচ্চিত্রের জন্য ৭৯ বছর বয়সে অস্কারের সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনীত হন তিনি।

৯৬তম অস্কারে মনোনীতদের সবার মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক সুরকার জন উইলিয়ামস। ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য ডায়াল অব ডেস্টিনি’র জন্য সেরা আবহ সংগীত বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। এখন তার বয়স ৯২ বছর। অস্কারের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক বিজয়ী ক্লিন্ট ইস্টউড। ‘মিলিয়ন ডলার বেবি’র জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার জয়ের সময় তার বয়স ছিল ৭৪ বছর।

১০.

৭৬ বছর পর

‘দ্য হোল্ডওভারস’-এর মাধ্যমে অস্কারের সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে ৭৬ বছর পর মনোনীত হলো বড়দিনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ছবি। সর্বশেষ ১৯৪৮ সালে ‘মিরাকল অন থার্টি ফোর্থ স্ট্রিট’ মনোনয়ন পায়। এর আগের বছর অস্কারের সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনীত হয় বড়দিনের পটভূমিতে সাজানো “ইট’স অ্যা ওয়ান্ডারফুল লাইফ”। রেকর্ড গড়া ‘দ্য হোল্ডওভারস’ ছবির গল্প একজন বদরাগী শিক্ষককে ঘিরে, বড়দিনে যেসব শিক্ষার্থী ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছে না তাদের তদারকির জন্য তাকে বোর্ডিং স্কুলে থাকতে হবে।

১১.

অস্কারে মনোনীত প্রথম আদিবাসী আমেরিকান

অস্কারের ইতিহাসে তিন আদিবাসী নারী সেরা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে লিলি গ্ল্যাডস্টোন ‘কিলারস অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন’ ছবির সুবাদে প্রথম আমেরিকান হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা উত্তর মন্টানার উপজাতি ব্ল্যাকফিট ইন্ডিয়ান রিজার্ভেশন সম্প্রদায়ে বেড়ে উঠেছেন। স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড (এসএজি) অ্যাওয়ার্ডস এবং গোল্ডেন গ্লোবস জেতায় তার অস্কার জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। ফলে তিনি হতে পারেন সেরা অভিনেত্রী বিভাগে অস্কারজয়ী প্রথম আদিবাসী আমেরিকান। 

লিলির আগে ‘হোয়েল রাইডার’ (২০০৪) ছবির জন্য অস্ট্রেলিয়ান-নিউজিল্যান্ডের তারকা কেইশা ক্যাসেল-হিউজ এবং ‘রোমা’র জন্য মেক্সিকান তারকা ইয়ালিৎজা আপারিসিও সেরা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পান। 

১২.

অভিনয়ে ১০ জনের প্রথম মনোনয়ন

এবারের আসরের মধ্য দিয়ে প্রথমবার অস্কারে মনোনীত হয়েছেন বিভিন্ন দেশের ১০ তারকা। তাদের মধ্যে রয়েছে জাতিগত বৈচিত্র্য। তারা হলেন– আইরিশ তারকা কিলিয়ান মারফি (ওপেনহাইমার, সেরা অভিনেতা), ব্রিটিশ তারকা এমিলি ব্লান্ট (ওপেনহাইমার, সেরা অভিনেত্রী), জার্মান তারকা সান্ড্রা হুলার (অ্যানাটমি অব অ্যা ফল, সেরা অভিনেত্রী), আমেরিকান অভিনেত্রী লিলি গ্ল্যাডস্টোন (কিলারস অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন, সেরা অভিনেত্রী), ড্যানিয়েল ব্রুকস (দ্য কালার পারপল, সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী), আমেরিকা ফেরেরা (বার্বি, সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী), ডে’ভাইন জয় র‌্যান্ডলফ (দ্য হোল্ডওভারস, সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী), আমেরিকান অভিনেতা জেফ্রি রাইট (আমেরিকান ফিকশন, সেরা অভিনেতা), স্টার্লিং কে. ব্রাউন (আমেরিকান ফিকশন, সেরা পার্শ্ব অভিনেতা) ও কোলম্যান ডমিঙ্গো (রাস্টিন, সেরা অভিনেতা)।

১৩.

কৃষ্ণাঙ্গ দুই তারকার রেকর্ড

‘আমেরিকান ফিকশন’ চলচ্চিত্রের জন্য জেফ্রি রাইট সেরা অভিনেতা এবং স্টার্লিং কে. ব্রাউন সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। অস্কারের ইতিহাসে একই ছবির জন্য সেরা অভিনেতা ও সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে দুই কৃষ্ণাঙ্গ তারকার মনোনয়ন পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। ‘আমেরিকান ফিকশন’-এর গল্প একজন হতাশাগ্রস্ত কৃষ্ণাঙ্গ কথাসাহিত্যিককে ঘিরে। কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে প্রকাশিত গৎবাঁধা বইয়ের প্রতি বিদ্রুপাত্মক একটি উপন্যাস ছদ্মনামে লেখেন তিনি। কিন্তু উদারপন্থী অভিজাত শ্রেণি এটাকে দামি সাহিত্য ভেবে বসে! বাজারে বইটি দেদার বিক্রি হতে থাকে এবং সমালোচকেরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়।

১৪.

যার অস্কার জয় প্রায় নিশ্চিত

১৯৯৩ সালে ‘চ্যাপলিন’ ছবিতে চার্লি চ্যাপলিনের ভূমিকায় অভিনয়ের সুবাদে অস্কারে প্রথমবার সেরা অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন পান রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। ২০০৮ সালে ‘ট্রপিক থান্ডার’ ছবির জন্য অস্কারে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন পান তিনি। কিন্তু ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ‘দ্য ডার্ক নাইট’ ছবিতে জোকার চরিত্রে অভিনয় করা প্রয়াত হিথ লেজারের কাছে হেরে যান তিনি। কাকতালীয় হলো, ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ ছবির সুবাদে ৯৬তম অস্কারে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার জয়ের দৌড়ে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র যোজন যোজন এগিয়ে। পঞ্চাশের দশকে আমেরিকান পারমাণবিক শক্তি কমিশনের প্রধান লুইস স্ট্রাউস চরিত্রে অনবদ্য নৈপুণ্য দেখিয়ে সবার মন জয় করেছেন তিনি।

১৫.

মরণোত্তর মনোনয়ন

কানাডিয়ান রক দল দ্য ব্যান্ডের সদস্য ও সুরকার রবি রবার্টসন গত বছরের আগস্টে মারা গেছেন। এর আড়াই মাস পর মুক্তি পায় তার আবহ সংগীত করা ‘কিলারস অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন’। ছবিটির জন্য অস্কারের সেরা মৌলিক আবহ সংগীত বিভাগে মরণোত্তর মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। মার্টিন স্করসেসির বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন রবি রবার্টসন। এ তালিকায় আরো রয়েছে ‘রেজিং বুল’ (১৯৮০), ‘দ্য কিং অব কমেডি’ (১৯৮২), ‘দ্য কালার অব মানি’ (১৯৮৬), ‘ক্যাসিনো’ (১৯৯৫), ‘গ্যাংস অব নিউইয়র্ক’ (২০০২), ‘দ্য উলফ অব ওয়াল স্ট্রিট’ (২০১৩) ও ‘দ্য আইরিশম্যান’ (২০১৯)। রবি রবার্টসনের স্মৃতির প্রতি ‘কিলারস অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন’ উৎসর্গ করেছেন স্করসেসি।

১৬.

গ্র্যামি মনোনীত একডজন তারকার অস্কার মনোনয়ন

৯৬তম অস্কারে মনোনীতদের মধ্যে ১২ জন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয় জন গ্র্যামি জিতেছেন। তারা হলেন বিলি আইলিশ ও তার ভাই ফিনিয়াস ও’কনেল, মার্ক রনসন। গ্র্যামি মনোনীতদের মধ্যে অস্কারের এবারের আসরে মনোনয়ন পেয়েছেন মার্টিন স্করসেসি, ব্র্যাডলি কুপার, ডায়েন ওয়ারেন, জন ব্যাটিস্ট, ড্যানিয়েল ব্রুকস, লুদবিগ গোরানসন, জন উইলিয়ামস ও ড্যান উইলসন।

১৭.

মিউজিক ভিডিও নির্মাতা থেকে অস্কারে সেরা পরিচালকের মনোনয়ন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পোল্যান্ডে নাৎসিদের আউশউইৎস বন্দিশিবিরের পটভূমিতে নির্মিত ‘দ্য জোন অব ইন্টারেস্ট’ এবারের অস্কারে পাঁচটি মনোনয়ন পেয়েছে। এরমধ্যে সেরা পরিচালক বিভাগে মনোনীত হয়েছেন ব্রিটিশ নির্মাতা জনাথন গ্লেজার। তার ঝুলিতে রয়েছে বৈচিত্র্যময় কর্মজীবন। তিন দশক আগে বেলজিয়ান বেভারেজ ব্র্যান্ড স্টেলা আর্টোয়া এবং আইরিশ বেভারেজ ব্র্যান্ড গিনেসের বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন তিনি। এছাড়া ব্রিটিশ রক ব্যান্ড রেডিওহেড, ম্যাসিভ অ্যাটাক, ব্লার এবং জামিরোকোয়াই’র গানের মিউজিক ভিডিও বানিয়েছেন জনাথন গ্লেজার।

/এমএম/
সম্পর্কিত
‘ওপেনহাইমার’ থেকে নোলানের আয় এক হাজার কোটি!
‘ওপেনহাইমার’ থেকে নোলানের আয় এক হাজার কোটি!
অস্কারের পরতে পরতে যুদ্ধের আবহে শান্তির জয়গান
অস্কারের পরতে পরতে যুদ্ধের আবহে শান্তির জয়গান
অস্কার ২০২৪: দু’হাত ভরে পুরস্কার পেয়েছে জাপান
অস্কার ২০২৪: দু’হাত ভরে পুরস্কার পেয়েছে জাপান
নগ্ন হয়ে অস্কারের মঞ্চে জন সিনা, কারণ কী
নগ্ন হয়ে অস্কারের মঞ্চে জন সিনা, কারণ কী
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু